পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপালে বৌদ্ধধর্ম্ম।
৪৫

বৌদ্ধগণ অন্য ভাবে লামাদিগের বুদ্ধত্ব প্রমাণ করিয়া থাকেন। তাঁহারা বলেন, মানবজাতির উপকারের জন্য যে সকল বোধিসত্ত্ব বারম্বর জন্মগ্রহণ করিয়া থাকেন লামাগণ সেই শ্রেণীর অবতার। নেপালে তিব্বতের লামার বিশেষ সম্মান আছে বটে, কিন্তু তাঁহার সহিত ঐ দেশের বিশেষ কোন সম্বন্ধ নাই।

নেপালের বৌদ্ধশাস্ত্র।

 তিব্বতের ন্যায় নেপালে বিস্তর প্রাচীন বৌদ্ধধর্ম্ম গ্রন্থ পাওয়া পাওয়া যায়। হড‍্সন্ সাহেব বিস্তর ধর্ম্মগ্রন্থ সংগ্রহ করিয়াছিলেন। এই সকল গ্রন্থ অধিকাংশই সংস্কৃত ভাষায় রচিত। নেপালের নেওয়ারদিগের দ্বারা এ সকল গ্রন্থ রচিত হয় নাই। তিব্বত হইতে আগত কোন লামা বা ভারতবর্ষ হইতে ধর্ম্মপ্রচারার্থ সমাগত সাধু মহাত্মাদিগের দ্বারা রচিত হইয়াছিল। এই সকল গ্রন্থ হইতে অনেক জ্ঞাতব্য বিষয় সংগ্রহ করা যাইতে পারে। দুঃখের বিষয় শঙ্কারাচার্য্য বিস্তর বৌদ্ধধর্ম্ম গ্রন্থ নেপালে দগ্ধ করিয়াছিলেন। অনুসন্ধান করিলে নেপালের চতুর্দ্দিকে এই সকল গ্রন্থ আজও পাওয়া যায়। গৃহস্থ এই সকল গ্রন্থ অত্যন্ত যত্নে রক্ষা করে। গৃহে অগ্নি লাগিলে সর্ব্বস্ব ত্যাগ করিয়া গ্রন্থ বুকে করিয়া পলাইয়া যায় এবং এই কারণেই এখনও নেপালে বৌদ্ধগ্রন্থ বিনষ্ট হয় নাই।

ধর্ম্মশাসন।

 তিব্বতের লামার ন্যায় নেপালের বৌদ্ধদিগের উপর কোন ব্যক্তিবিশেষের অপ্রতিহত শক্তি নাই। গুর্খারাজগুরু তাহাদিগের বর্ণসম্বন্ধীয় সমুদায় বিবাদ বিসম্বাদের মীমাংসা করিয়া থাকেন।