বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চনদে জাগ্রত ভারত

থেকে গ্রীক প্রভুত্ব হ’ল বিলুপ্ত। বহু গ্রীক তখনো ভারত ত্যাগ করলে না বটে, কিন্তু এখানে তারা আর প্রভুর মতো, বিজেতার মতো বাস করত না।

 কিন্তু হতভাগ্য বীর পুরু বা পর্বতক স্বাধীনতার সুখ বেশীদিন ভোগ করতে পারেন নি। চন্দ্রগুপ্তকে সাহায্য করেছিলেন ব’লে ভারতে প্রবাসী সমস্ত গ্রীকই ছিল তাঁর উপরে খড়গহস্ত। সম্ভবত খৃঃ-পূঃ ৩১৭ অব্দে য়ুদেমস্ নামে এক গ্রীক দুরাত্মা মহারাজা পুরুকে গোপনে হত্যা ক’রে তাঁর একশো-বিশটি হাতী চুরি ক’রে ভারত ছেড়ে পালিয়ে যায়।

 পঞ্চনদের তীর থেকে বিজয়ী চন্দ্রগুপ্ত আবার সসৈন্যে যাত্রা করলেন তখনকার ভারতে সর্বশ্রেষ্ঠ মগধ-সাম্রাজ্যে। বলা বাহুল্য এরও মূলে ছিল চাণক্যের মন্ত্রণা।

 নন্দ-রাজ্যের উপরে চাণক্যের জাতক্রোধের একটা কারণের কথা শোনা যায়। চাণক্য ছিলেন মগধরাজ ধন-নন্দের দানশালার অধ্যক্ষ এবং ধন-নন্দ ছিলেন অতিদানশীল রাজা। চাণক্যকে তিনি তাঁর নামে এক কোটি টাকা পর্যন্ত দান করবার অধিকার দিয়েছিলেন। কিন্তু চাণক্যের উদ্ধত স্বভাব ও স্বাধীন ব্যবহার সইতে না পেরে শেষটা তিনি তাঁকে পদচ্যুত ক’রে তাড়িয়ে দেন এবং চাণক্যও প্রতিজ্ঞা করেন, তিনি এই অপমানের প্রতিশোধ না নিয়ে ছাড়বেন না।

 দ্বিতীয়বার মগধ-সাম্রাজ্য আক্রমণ ক’রে চন্দ্রগুপ্ত যুদ্ধে জয়ী হ’লেন। নিহত ধন-নন্দের সিংহাসন এল তাঁর হাতে। মহা সমারোহে সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের অভিষেক ক্রিয়া সম্পন্ন হ’ল।

 কিছুদিন পরে পঞ্চনদের তীরে হ’ল আবার নূতন বিপদের সূচনা।

 আলেকজাণ্ডারের অন্যতম প্রধান সেনাপতি সেলিউকস্ (উপাধি ‘নিকাটর’ অর্থাৎ দিগ্বিজয়ী) তখন গ্রীকদের প্রাচ্য সাম্রাজ্যের

১১৫