পাতা:পঞ্চপল্লব - পাঁচকড়ি চট্টোপাধ্যায়.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অৰ্দ্ধোদয় যোগ। - * ****** করিবার জন্য কৌতুহল হইল। আমার বাড়ী হইতে ত্ৰিবেণী বড় বেশীদূর নয়,-গ্ৰাণ্ডট্রাঙ্ক রোড ধরিয়া গেলে প্ৰায় ১২১৩ মাইল। আমি আমার বাঈস ষ্টকেলটী লষ্টয়া প্ৰত্যুষে উঠিয়া বাড়ী হইতে যাত্ৰা করিনি বলিয়া স্থির করিলাম। কোন নির্দিষ্ট স্থানে আমার সহিত মিলিত হইবার জন্য আমার একটা ভূ ত্যকে উপদেশ দিয়া আমি রওনা হইলাম । যখন মাগরা পৌছিলাম, তখনও সূর্যোদয়ের অনেক বিলম্ব আছে। তখনও মানচন্দ্ৰ সাদা মেঘখণ্ডগুলির উপর দিয়া ধীরে ধীরে ভাসিন্ন৷ যাইতেছে । মগরা হইতে বেঙ্গল প্ৰভিন্সিয়াল রেলওয়ে ত্ৰিবেণী পর্যা ক্ষু গিয়াছে। গাড়ীগুলি খুব ছোট ছোট ; বহুসংখ্যক যাত্রী লইয়া ক্ৰমাগত সাতায়াত করিতেছে। আজ আর কোন নিয়ম নাই । গাড়ীতে স্তানাভাণবশতঃ গাড়ীর পশ্চাতে, ব্ৰেকে, পায়দানিতেও অনেক লোক চড়িয়াছে। বস্তুতঃই চহা এক নূতন দৃশ্য ! যাত্ৰীগণের মুখে কি এক অপূৰ্ব্ব উৎকণ্ঠার ভাব! নির্দিষ্ট সময়ে গঙ্গাস্নান না করিতে পারিলে তাঁহাদের সমস্ত পরিশ্রম পণ্ড হইবে। সেই জন্য এত উৎকণ্ঠ-এত ব্যস্ততা । আমিও যাইতে লাগিলাম। দুই দিকে নিবিড় বন, মধ্য দিয়া পথ । পিপিলিকাশ্রেণীর ন্যায় ক্রমাগতঃ লোক চলাচল হইতেছে । পিনপথ অতিক্ৰম করিয়া গ্ৰাণ্ডট্রাঙ্ক রোডে পড়িলাম । ঠিক মোড়ে পৌছিয়া যাহা দেখিলাম, তাহাতে আমার মাথা ঘুরিয়া গেল। দেখিলাম, একটা ত্ৰয়োদশবর্ষীয়া বালিকা একাকিনী সেই পথপার্শ্বে দাড়াইয়া কাদিতেছে, এত লোকের মধ্যেও সে একাকিনী ; কেহ একবার ফিরিয়া ও দেখিতেছে না । আশ্চৰ্য্য মনুষ্য-প্রকৃতি ! নিজের লইয়াই ব্যস্ত ; পরের দিকে তাকাইবার অবসর নাই। বালিকা গৌরাঙ্গী, পরিধানে একখানি নীলাম্বরী