পাতা:পঞ্চপল্লব - পাঁচকড়ি চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

| যখন রবীন্দ্র চেতনা লাভ করিলেন, তখন দেখিলেন, তাহার চতুর্দিকে অনেক লোক জমিয়াছে। গৃহস্বামী হেমেন্দ্ৰনাথ আসিয়াছেন,-রবীন্দ্রের বক্ষঃস্থিত সেই অনাথ শিশু আহত অবস্থায় হেমেন্দ্র বাবুর জনৈক ভূত্যের কোলে-শিশুর ললাট কাটিয়া গিয়াছে।--তথা হইতে শোণিতধারা ঝরিতেছে। রবীন্দ্ৰ উঠিবার চেষ্টা করিলেন,-পারিলেন না ; লাঠির আঘাতে র্তাহারও মাথা কাটিয়া গিয়াছে—দরদর-ধারে শোণিতধারা নিঃস্থত হইতেছে। রবীন্দ্ৰ কাতর দৃষ্টিতে হেমেন্দ্রের মুখের দিকে চাহিয়া অতিকষ্টে বলিলেন—“হেম—।” রবীন্দ্রের আর বাক্যশৃঙ্কুৰ্ত্তি হইল না। র্তাহার স্বর হেমেন্দ্রের কৰ্ণে যেন কতদিনের পরিচিত ৰলিয়া 'বোধ হইল। হেমেন্দ্ৰ সন্ন্যাসীকে ভাল করিয়া দেখিলেন। দেখিলেনসন্ন্যাসীর চক্ষুদ্বয় জলভারাক্রান্ত। সহসা তাঁহার যেন কত কালের একটী পুরাতন পরিচিত মুখ মনে পড়িল। তাহার বক্ষঃস্থল স্পন্দিত হইল ; তিনি আর দাড়াইতে পারিলেন না-সন্ন্যাসীর পাশ্বে বসিয়া পড়িলেন। রবীন্দ্ৰ অতিকষ্টে আবার বলিলেন “হেম-” হেমেন্দ্রের বুক কঁাপিয়া উঠিল, তাহার সন্দেহ দূর হইল। তিনি রবীন্দ্রকে চিনিতে পারিলেন। যুগপৎ হর্ষে, বিষাদে, অনুতাপে তাহার। আর বাক্যাঙ্গুক্তি হইল না। তিনি রবীন্দ্রের বক্ষঃস্থলে মুখ লুকাইয়া বালকের ন্যায় উচ্চৈঃস্বরে কাদিয়া উঠিলেন। অবিরত শোণিতস্রাবে রবীন্দ্রের জীর্ণদেহের শক্তিটুকুও ক্রমশঃ হ্রাস চুইতেছিল। রবীন্দ্র সত্বরই সংজ্ঞা হারাইলেন। হেমেন্দ্রনাথ তাঁহাকে - সযত্নে ধরিয়া সাবধানে আপনার শয়নকক্ষে লইয়া গেলেন এবং দুগ্ধফেননিভ শয্যায় শয়ন করাইলেন। শিশুটিকে তাহার ভগ্নী অনুপমার হস্তে দিয়া su