পাতা:পণ্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রীর জীবনচরিত.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রান্নাঘরের উনান দেখিয়া আসিয়া। তবে সার্টিফিকেট দিতেন। এই "সময় হরানন্দ কলিকাতায় চাকরি করিতেন। গ্ৰীষ্মের ছুটীতে দেশে । গিয়াছিলেন। ছুটীর শেষাশেষি কলিকাতা আসিবার দিন নিকট হইয়াছে, এমন সময় শুনিলেন মজিলপুর হইতে ৩/৪ মাইল দূরে কোন চাষ লোক সপরিবারে অনাহারে আছে-শুনিয়া নিজের গোলা হইতে দুই পালি চাউল কাপড়ে বাধিয়া হাঁটিয়া তাকে দিয়া । আসিলেন এবং সেই সঙ্গে বলিলেন ‘রবিবার যখন হাটে যাবে আমি তোমাকে সার্টিফিকেট দিব, তুমি সরকারি সাহায্য পাবে।” সেই রবিবারই কলিকাতায় ফিরিবার দিন। পরদিন সোমবার দুইমাস ছুটীর পর স্কুল খুলিবে, অনুপস্থিত হইলে দুইমাসের মাহিনী কাটা যাইবে। এদিকে হরানন্দের মনে নাই যে চাষা লোকটিকে সার্টফিকেট লাইবার জন্য সেই দিনই আসিতে বলিয়াছেন। যথাসময় শিবনাথকে সঙ্গে লইয়া, শালতি করিয়া যাত্ৰা করিলেন, শালতি । অনেকদূর আসিয়াছে এমন সময় হঠাৎ তােহর মনে পড়িল সেই চাষা লোকটীকে তিনি আসিতে বলিয়াছিলেন। অমনি চীৎকার করিয়া মাঝিদের ডাকিয়া বলিলেন-“বাপু থামা,থামা-শালতিফেরা : —আমার আর যাওয়া হবে না, বাড়ী যেতে হবে—তোদের ভয় নাই আমি তােদের পুরা ভাড়া দিব।” শিবনাথ বলিলেন—“বাবা কাল যে স্কুল খুলিবে, আপনাকে উপস্থিত হতেই হবে”। হরানন্দ । বলিলেন—“তা কি হবে—আমার না হয় দুমাসের মাহিন৷ কাটা যাবে। আর এ লোকটা যে সপরিবারে অন্নাভাবে মারা যাবে। আমি নিজের কথা এখন ভাবতে পারি না—এ গরীবকে কথা। দিয়াছি আমায় তার উপায় করতেই হবে।” । ।