পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হইলেও মনের জোরের দ্বারা সম্পন্ন কর। এরূপ অবস্থা মোটেই বাঞ্ছনীয় নহে।

বুধবার, ২১শে জানুয়ারী

 তোমার পরীক্ষার বিস্তৃত খবর পেয়ে সুখী হইলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানাবিধ কাজ পেয়েছ শুনে আরও আনন্দিত হইলাম। তুমি ঐ সব কাজে কৃতিত্ব লাভ করিতে পারিবে আমার বিশ্বাস—তবে আমার একমাত্র আশঙ্কা তোমার স্বাস্থ্যের জন্য।

 এ দেশের “নেটিভদের” কতগুলি গুণ আছে যার জন্য এত বড় হতে পেরেছে। প্রথমতঃ—এর ঘড়ির মত ঠিক সময়ে সব কাজ করিতে পারে, দ্বিতীয়তঃ এদের একটা robust optimism আছে—আমরা জীবনের দুঃখের বিষয় বেশী ভাবি, এরা জীবনের সুখের এবং আলোর বিষয় বেশী ভাবে। তারপর এদের strong common sense আছে—এবং নিজের জাতীয় স্বার্থ খুব ভাল বুঝে। এখন মোটের উপর দাঁড়িয়েছে আমাদের জলবায়ুর দোষ—আমাদের দেশের হাওয়াটা বদলাইতে হইবে।

 তোমার নিজের বিষয় এবং শরীরের বিষয় অযত্নের প্রধান কারণ দাঁড়িয়েছে—ঐ প্রাচ্যদেশের ঔদাসীন্য। “কি হবে শরীরের যত্ন নিয়ে, দু দিনের শরীর দু দিন পরে মাটির সঙ্গে মিশে যাবে!” এরূপ ঔদাসীন্য কর্ম্মবীরের পক্ষে মোটেই বাঞ্ছনীয় নহে। তোমার একটু প্রতীচ্যের হাওয়া দরকার তবে যদি robust optimism আসে।

 বেণীবাবুকে একখানা পত্র দিয়েছি। দত্তগুপ্ত মহাশয়কে এখনও দিই নাই।

 * * *

 আমার আর বেশী কিছু বলিবার নাই। নিজ অবহেলার জন্য যদি অল্প বয়সে তোমার শরীর নষ্ট হয়—সে অপরাধ তোমারই। অনেক ঘটনার উপর মানুষের হাত থাকে না—কিন্তু তাহা ছাড়া

৮৫