বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 আমি এখন দুই পথের সংযোগস্থলে উপস্থিত, এবং কোন মধ্যপথ আশ্রয় করিবার কোনো উপায় নাই। হয় আমাকে এই গলিত চাকুরির মায়া ছাড়িয়া সর্ব্বান্তঃকরণে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করিতে হইবে, নতুবা সমস্ত আদর্শ আকাঙ্ক্ষায় জলাঞ্জলি দিয়া সিভিল সার্ভিসে প্রবেশ করিতে হইবে।....আমি জানি আমার এই বিপজ্জনক হঠকারিতায় আত্মীয়স্বজনের মধ্যে অনেকে তুমুল সোরগোল তুলিবেন।....কিন্তু তাঁহাদের মতামতে, নিন্দায় অথবা প্রশংসায় আমার কিছু আসে যায় না। কিন্তু আপনার আদর্শবাদে আমার আস্থা আছে তাই আপনার নিকট আবেদন করিতেছি। পাঁচ বৎসর পূর্ব্বে এই সময়ে আমার আর এক বিপজ্জনক প্রচেষ্টায় আপনার নৈতিক সমর্থন পাইয়াছিলাম। এক বৎসরের জন্য সেই সময় আমার ভবিষ্যৎ অন্ধকার বোধ হইয়াছিল, তবু আমি তাহার সমস্ত পরিণাম নির্ভয়ে মাথা পাতিয়া নিয়াছিলাম, কখনো নিজের নিকট অভিযোগ করি নাই, সে ত্যাগ স্বীকার করিতে পারিয়াছিলাম বলিয়া আজও গর্ব্ব অনুভব করি। সেই ঘটনার কথা মনে করিয়া মনে বল পাইতেছি, আমার এই বিশ্বাস আরও দৃঢ় হইতেছে যে, ভবিষ্যতে আত্মত্যাগের যে কোনও আহ্বানকে আমি সাহস এবং ধৈর্য্যের সহিত গ্রহণ করিব। পাঁচ বৎসর পূর্ব্বে আপনি স্বেচ্ছায় এবং মহৎভাবে আমাকে যে নৈতিক সমর্থন জানাইয়াছিলেন আজও তাহা পাইব এ আশা করিতে পারি না কী?....

 এবার বাবাকে তাঁহার সম্মতি ভিক্ষা করিয়া পৃথক ভাবে লিখিলাম। আশা করি আপনি যদি আমার সহিত একমত হন তাহা হইলে বাবাকেও তাহাতে সম্মত করাইতে চেষ্টা করিবেন। আমার স্থির বিশ্বাস এ বিষয়ে আপনার মতের বিশেষ গুরুত্ব আছে।

(ইংরাজী হইতে অনূদিত)

৯৯