বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

শরৎচন্দ্র বসুকে লিখিত

৬০
১৩।২।২১

 ...যেদিন আই. সি. এস পরীক্ষার ফল বাহির হইয়াছে সেইদিন হইতে আমার মনে এই প্রশ্ন আন্দোলিত হইতেছে: যদি চাকুরিতে থাকি তাহাতে দেশের অধিক উপকারে আসিব, না চাকুরি ছাড়াটাই দেশের পক্ষে মঙ্গলজনক হইবে। এই প্রশ্নের উত্তর মিলিয়াছে। এ বিষয়ে আমি স্থিরনিশ্চয় হইয়াছি যে জনসাধারণের মধ্যে থাকিয়াই আমি দেশের অধিক মঙ্গল সাধন করিতে পারিব, আমলাতন্ত্রের মধ্যে প্রবেশ করিয়া নহে। চাকুরিতে থাকিয়া দেশের কোনো উপকার করা যায় না ইহা আমার বক্তব্য নহে। আমি বলিতে চাহি যে তাহাতে যেটুকু মঙ্গল হইতে পারে আমলাতন্ত্রের শৃঙ্খলমুক্ত দেশসেবার তুলনায় তাহা অতি নগণ্য। নীতির দিকটাও এখানে দেখিতে হইবে সেকথা পূর্ব্বেই বলিয়াছি। বিদেশী আমলাতন্ত্রের অধীনতাকে মানিয়া লওয়া আমার নীতিতে অসম্ভব। জনসেবার প্রথম প্রয়োজন সমস্ত সাংসারিক আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ। সাংসারিক উন্নতির পথ একেবারে পরিত্যাগ করিলেই তবেই জাতীয় কর্ম্মে সম্পূর্ণভাবে আত্মোৎসর্গ করা সম্ভব। আমার মনশ্চক্ষুতে অরবিন্দ ঘোষের দৃষ্টান্ত সর্ব্বদা উজ্জ্বল রহিয়াছে। ক্রমেই বোধ করিতেছি—এই আত্মত্যাগের দ্বারা সেই দৃষ্টান্তের দাবী মিটাইতে পারিব। আমার পারিপার্শ্বিক অবস্থাও তাহার অনুকূল।

(ইংরাজী হইতে অনূদিত)

১০৭