পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৩

বিভাবতী বসুকে লিখিত

শ্রীশ্রীদুর্গা সহায়

মান্দালয় জেল
১১।৯।২৫

পূজনীয়া মেজবৌদিদি,

 আপনার চিঠি পেয়ে যার পর নাই আনন্দিত হয়েছি। আমার চিঠি পড়ে আপনারা যে রস উপভোগ করেছেন তা জেনে সুখী হয়েছি—কারণ মধ্যে ২ আশঙ্কা হয় যে হয়তো জেলে থাকতে থাকতে জীবনের সব রস শুকিয়ে যাবে। শাস্ত্রে বলে “রসো বৈ সঃ”—অর্থাৎ ভগবান নাকি রসময়। সুতরাং রস যে লোক হারিয়েছে—সে যে জীবনের সারবস্তু—আনন্দ— হারিয়েছে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই—তার জীবন তখন ব্যর্থ, নিরানন্দ ও দুঃখময়। আমার চিঠি পড়ে আপনারা যদি আনন্দ পান, তাহলে বুঝতে পারব যে আমি আনন্দ দিবার ক্ষমতা এখনও হারাই নাই। পৃথিবীর বড় বড় লোকেরা—যেমন দেশবন্ধু, রবি ঠাকুর ইত্যাদি অনেক বয়স পর্য্যন্ত, এমন কি জীবনের শেষ দিন পর্য্যন্ত—আনন্দ ও স্ফূর্ত্তি হারান না। সে আদর্শ আমাদের পক্ষে অনুকরণীয়।

 যাক্—বক্তৃতা রেখে এখন গল্প করি। এখানে এমন একটা ঘটনা ঘটে গেছে যা শুনলে আপনারা মনে করবেন বুঝি নাটক অথবা উপন্যাসের কথা বলছি। আমাদের মলয় হঠাৎ খালাস পেয়ে বাড়ী চলে গেছে। তার সাত বৎসর মেয়াদ হয়েছিল এবং প্রায় সাড়ে তিন বৎসর মেয়াদ সে ভোগ করেছিল। গভর্ণমেণ্টের নূতন নিয়ম অনুসারে যাদের বেশী মেয়াদ হয়, তাদের মেয়াদের অর্দ্ধেকটা···ভোগ হয়ে গেলে, তারা খালাস পেতে পারে। সে নিয়মানুসারে হঠাৎ একদিন খবর এলো যে মলয় কালই খালাস পাবে। যার তিন বৎসর মেয়াদ বাকী আছে, সে যদি হঠাৎ খবর

১৬৯