পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 শ্যামাদাস কবিরাজ এখনও পর্য্যন্ত নিজে অর্থসাহায্য করিয়া কলেজটিকে বাঁচাইয়া রাখিয়াছেন। কিন্তু জনসাধারণ অথবা কর্পোরেশন যদি সাহায্যের জন্য না আগাইয়া আসেন তাহা হইলে কলেজটিকে চালানো তাঁহার পক্ষে কষ্টকর হইবে। স্বভাবতঃই তিনি এই একত্রীকরণের প্রস্তাবে রাজী হইতে পারেন না, কারণ তাহা হইলে যামিনী এণ্ড কোম্পানীর ক্ষমতা ও আধিপত্য বৃদ্ধি পাইবে। এই নূতন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালন ব্যবস্থায় যদি তাঁহাদের কোনও ক্ষমতাই না থাকে, তবে তিনি উহাতে কিছুতেই রাজী হইবেন না।

 আমাদের মধ্যে যাঁহারা দেশবন্ধুর অনুগত ছিলেন তাঁহাদের উপরই তাঁহার কাজ এবং তিনি যে কলেজ প্রতিষ্ঠা করিয়া গিয়াছেন উহার দায়িত্বভার ন্যস্ত হইয়াছে। কাউন্সিলরগণ তাঁহাদের এই দায়িত্ব সম্বন্ধে সচেতন আছেন কি?

 যদি সম্মানজনক সর্ত্তে একত্রীকরণ সম্ভব না হয় তাহা হইলে যতদিন না যুক্তি ও ন্যায়াদর্শ প্রতিষ্ঠিত হয় ততদিন তিনটি কলেজকে আলাদাভাবে অর্থসাহায্য দেওয়াই বরং সঙ্গত হইবে।

 যামিনী কবিরাজ বলিয়া বেড়াইতেছেন যে, তিনি নূতন কলেজের জন্য ৫০০০০ টাকা চাঁদা দিয়াছেন। বৈদ্যশাস্ত্রপীঠ চালাইবার জন্য ইতিমধ্যে শ্যামাদাস কবিরাজকেও তাঁহার নিজের বহু অর্থ ব্যয় করিতে হইয়াছে—অবশ্য যদি অর্থের প্রশ্নটাই এক্ষেত্রে মুখ্য বিবেচ্য হয়। আমার মনে হয় না যে, অর্থসাহায্যের ব্যাপারে তাঁহার দানও খুব সামান্য।

 যদি আমার কথায় আপনার কোনও সন্দেহ থাকে, তবে যে কোন দিন বৈদ্যশাস্ত্রপীঠে গিয়া আপনি দেখিয়া আসিতে পারেন। শ্যামাদাস কবিরাজকে টেলিফোনে খবর দিয়া গেলে তিনি খুশী হইয়া সব কিছু আপনাকে ঘুরাইয়া দেখাইবেন। শ্যামাদাস নিজে যদিও একজন প্রাচীনপন্থী কবিরাজ তবু বৈদ্যশাস্ত্রপীঠের পাঠ্যসূচীতে তিনি পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, শারীর-বৃত্ত ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করিয়াছেন।

১৯০