পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

জন্য দেওয়া হয়। এখন তার ভাষার চেয়ে তার ভাবভঙ্গী দেখে বুঝি। তার আর একটা বড় গুণ আছে, সে কোনও নাম ঠিক করে উচ্চারণ করতে পারে না। “ভোগ সিং” না ব’লে বলে “বুসিং”; কৃপারামের স্থলে সে বলে “ত্রিপদ-রাজু”; সুভাষবাবুর স্থলে সে বলে “সুর্ব্বন বাবু”; “বিপিন বাবু” স্থলে “গোবিন্ বাবু” ইত্যাদি। তার ভাষার একটা নমুনা দিই—“ত্রিপদ-রাজু চলা গয়া সীদে” অর্থাৎ কৃপারাম চলে গেছে। এর মধ্যে “চলা গয়া” হচ্ছে হিন্দুস্থানী এবং “সীদে” হচ্ছে বর্ম্মা কথা। ইয়াঙ্কায়ার সদা সর্ব্বদ। আশঙ্কা হয় আমরা কোনদিন চলে যাব। তখন ওর খাওয়াদাওয়ার একটু অসুবিধে হতে পারে।

 খবর কাগজ নিয়ে আমর! যদি একত্র বসে পড়তে বসি—অমনি তার অন্তরাত্মা খাঁচা ছাড়া হবার উপক্রম। একটু আড়ালে এলেই সে চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞাসা করে, “বাবু বেংলা চলা গয়া?” অর্থাৎ বাবু বাংলা দেশে চলে যাবেন না কি? “না” উত্তর পেলে সে আশ্বস্ত হয়। তবে মুখে বলে, “বাবু, বেংলা চলা গয়া বহুৎ কাউণ্ডে” অর্থাৎ বাবুরা বাংলা দেশে চলে গেলে খুব ভাল হয়। “কাউণ্ডে” হচ্ছে বর্ম্মা কথা, তার মানে “ভাল”।

 যাক্ একদিনে কাহিনী শেষ করলে চলবে না। পলি কেমন আছে? কবিরাজী ওষুধ খেয়ে কিছু উপকার পেয়েছি, কিন্তু উপকারটা স্থায়ী হবে কি না বলতে পারি না। মধ্যে সর্দ্দিজ্বর মত হয়েছিল এখন ভাল আছি। আপনারা সকলে কে কেমন আছেন? আমার প্রণাম জানবেন।

ইতি— 
শ্রীসুভাষ 

২১৩