কিন্তু পূর্ব্বেই বলেছি যে সন্ন্যাস মানি না—তাই দুঃখকে অস্বীকার করবার আমার অধিকার নাই।
যে সব পুরান স্মৃতি মনের মধ্যে ভেসে আসে এবং আমার এই সুদীর্ঘ অবসর কাটাবার সম্বলস্বরূপ হয়ে দাঁড়ায় সেগুলির মধ্যে ব্যথার অংশ যে বেশী তা মনে হয় না। তার মধ্যে সুখের ও শান্তির উপাদানই বেশী—তবে বর্ত্তমানের সঙ্গে তুলনা করলেই ব্যথার উদ্রেক হয়। সে ব্যথার মধ্যেও যে কোন সুখ নাই এ কথা আমি বলতে পারি না।
আমার একজন বন্ধু কিছুকাল পূর্ব্বে আমাকে লিখেছিলেন—দেশবাসীর মিলিত অশ্রুরাশির মধ্যে নিজের অশ্রু মিশিয়ে আমরা ব্যথার গুরু ভার লাঘব করছি কিন্তু সে সান্ত্বনা ভগবান আপনাদের দেন নাই। এ কথা সত্য। নীরবে ও নির্জ্জনে অশ্রুমালা রচনা করা খুব কষ্টদায়ক; কিন্তু এ বিপদের সময়েও যে আমরা কোনও কাজে লাগলাম না, এ ভাবনা কম কষ্টদায়ক নয়।
নিজেকে কর্ম্ম-কোলাহল হতে দূরে রাখলেই যে “নিজের ব্যক্তিগত দুঃখ লইয়া কাহাকেও ব্যস্ত করা” হইবে না এ কথা মনে করবার কোনও কারণ নাই—বরং উল্টাটাই ঘটিতে পারে। আপনি লিখেছেন—জানি না তোমাদের সাথে এ জীবনে দেখা হইবে কি না। আমি মোটেই নিরাশ নই যদিও আমি সকল ব্যথার জন্য সর্ব্বদা প্রস্তুত আছি। আমার মনে হয় যে দেশমাতৃকার কল্যাণের জন্য যদি আমাকে সারাজীবন কারাগারে যাপন করতে হয় আমি তাতে মোটেই পশ্চাৎপদ হব না।
আমি আমার জীবনটাকে একটা adventure বলেই গ্রহণ করছি—জীবনের সাফল্য বা ব্যর্থতা ভগানের হাতে। আমার দুঃখ
২৬৪