পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/২৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কলিকাতা হইতে প্রকাশিত ইংলিশম্যান পত্রিকাখানি আমি পাইয়া থাকি এবং জেল কর্ত্তৃপক্ষেরই উহা পাঠানোর কথা। যখন আমি মান্দালয় জেলে ছিলাম তখন উহা নিয়মিতই পাইয়া আসিয়াছি। ইহার জন্য কাহাকেও কোনও দিন কিছু বলিতে হয় নাই। কিন্তু এ বিষয়ে রেঙ্গুন জেলের কর্ত্তৃপক্ষের অবহেলা অত্যধিক; ফলে কলিকাতার ডাক আসিলে প্রতিবারই তাহাদের ঐ পত্রিকাখানির কথা স্মরণ করাইয়া দিতে হয়। অভিজ্ঞতা হইতে বুঝিয়াছি যে, যখনই আমি তাহাদের এ বিষয়ে স্মরণ করাই নাই তাহারা আমাকে পত্রিকাখানি পাঠান নাই। এই পত্রিকা পাঠানোর ব্যাপারে কর্ত্তব্যে অবহেলার জন্য আমাকে কয়েকবারই জেলারদের কাছে অভিযোগ করিতে হইয়াছে এবং এ বিষয়ে আমি নিজেই একবার অন্ততঃ Major Flowerdew-কে বলিয়াছিলাম। এই সব অসুবিধার দরুন কলিকাতার ডাক আসামাত্র প্রত্যেক বারই চীফ জেলারকে পত্র লেখা আমার অভ্যাসে দাঁড়াইয়া গিয়াছে এবং আজ সকাল পর্য্যন্তও ইহাতেই বেশ ভাল ভাবে কাজ চলিয়া যাইতেছিল।

 সুপারিণ্টেণ্ডেণ্ট, ডেপুটি সুপারিণ্টেণ্ডেণ্ট, চীফ জেলার ও জেলের অন্যান্য কর্ম্মচারী কাহারও নিকটেই ইহা অজ্ঞাত নয় যে, আমাকে কিরূপ একাকী ও নিঃসঙ্গ অবস্থায় এখানে দিন কাটাইতে হয় এবং সংবাদপত্র পাঠ করিয়া কোন রকমে সময় কাটানো ছাড়া আমার আর কোনও উপায় নাই। একথাও তাঁহারা জানেন যে, আমার কাছে বই ও সাময়িক পত্র খুব বেশী নাই। কেন না, মান্দালয় জেলের সুপারিণ্টেণ্ডেণ্ট আমাকে বলিয়াছিলেন যে, দুই-তিন দিন থাকিতে গেলে যাহা প্রয়োজন তাহার অতিরিক্ত কিছু যেন আমি সঙ্গে না লই। অতএব জেল কর্ম্মচারীদের অনুগ্রহে যখন যে পত্রিকা সংগ্রহ করিতে পারি উহার সাহায্যেই আমাকে সময় কাটাইতে হয়। চীফ জেলার মিঃ সলোমনকে পত্র লেখার সময় আমি খুব নিঃসঙ্গ বোধ করিতেছিলাম এবং সেই কারণেই প্রাতঃরাশের

২৭৪