পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যে সংশয়গুলি অমূলক। দেখিতেছি স্থান নির্ব্বাচনে বিন্দুমাত্র ভুল হয় নাই। ইহার নেপথ্যে কর্ণেল কেলসলের নামের কিছু রহস্যময় প্রভাব বিদ্যমান এই মর্ম্মে আপনি যে ধারণা পোষণ করিয়াছেন তাহা সম্ভব বলিয়া আমারও মনে হয়।

 আমার চিকিৎসক অগ্রজ এবং ডাক্তার বিধান রায় উভয়েই এখানে ছিলেন। ডাঃ রায় সেদিন চলিয়া গেলেন। আমি স্থির করিয়াছি যতক্ষণ পর্য্যন্ত সম্পূর্ণরূপে আবোগ্যলাভ না করিতেছি ততক্ষণ কোন কাজে হস্তক্ষেপ করিব না। যদিও এখন ইহা স্থির করিয়াছি বটে তবে, ইহাও আপনি আশা করি উপলব্ধি করিবেন যে কর্ম্মহীন অবস্থায় দিনাতিপাতের জ্বালাও কিছুমাত্র কম নয়।

 চক্রবর্ত্তী, ঘোষ ও গঙ্গোপাধ্যায় মহাশয় ত্রয়ের অসুস্থতার সংবাদে উদ্বিগ্ন রহিলাম। তবে ইহাও বুঝি যে, এ বিষয়ে আমি একান্ত নিরুপায়।

 যখন আমি কলিকাতায় ছিলাম তখনই আমার রেশমী লুঙ্গি ম্যাণ্ডেলে হইতে ফেরৎ পাইয়াছিলাম। ইহা আমি আশাই করি নাই এবং সেইরূপ চিন্তা করিয়া তথায় আমার পরিচর্য্যাকারী বন্দী মং টিনকে দান করিয়া আসিয়াছিলাম। এ বিষয়ে আমি তথাকার তত্ত্বাবধায়ককে বলিয়াই আসিয়াছিলাম যে মং টিনের মেয়াদ সমাপ্ত হওয়ার পর ঐ লুঙ্গিটি যেন তাহাকে দেওয়া হয়। অথচ সেই লুঙ্গিটি আমাকেই ফেরৎ পাঠাইয়া দেওয়া হইল। লোকটি যখন মুক্তিলাভ করিয়া বিষয়টি জানিতে পারিবে তখন সে যে কি পরিমাণে আশাহত হইবে ইহা ভাবিয়া আমার মন যথেষ্ট ভারাক্রান্ত হইয়া উঠিতেছে। লুঙ্গিটি আমি ইচ্ছা করিয়াই মং টিনের জন্য রাখিয়া যাইতেছি···ম্যাণ্ডেলে পরিত্যাগের পূর্ব্বে এই কথাটি কি আপনাকে বলিতে বিস্মৃত হইয়াছিলাম? আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য ঐ লুঙ্গি পুনরায় মং টিনের জন্যই ম্যাণ্ডেলে প্রেরণ করিতে প্রস্তুত আছি। যতদূর মনে পড়ে উহার সহিত একটি পুস্তকও পাইয়াছি কিন্তু পুস্তকটির নাম কিছুতেই মনে

৩৩২