পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হইয়া থাকিব? এই অসীম বিশ্বের মধ্যে মানুষের গড়া ক্ষুদ্র সংসারটাই কি সবচেয়ে বড় সত্য?

 আপনার দিবার অনেক কিছু আছে—দেশ এখনও তার জন্য প্রতীক্ষা করিতেছে। এটা আমার মনগড়া কথা নয়—দেশের প্রাণের কথা। তবে আপনার দেয় আপনি দিবেন কি না—তার মীমাংসা আপনার হাতে। দেশ যাহা আশা করিতেছে তাহা যদি না পায় তবে দেশেরই দুর্ভাগ্য—এ ছাড়া আর কি বলিব।

 আপনি লিখেছেন—“নবীনের প্রবীণের চিন্তাসূত্র—কর্ম্মধারা এক নয়।” এ কথা সত্য কিন্তু তথাকথিত নবীনদের মধ্যে অনেক বৃদ্ধ পাওয়া যায়—এবং তথাকথিত বৃদ্ধদের মধ্যে অনেক তরুণ পাওয়া যায়। তরুণেরা যদি আপনাকে তাদেরই একজন মনে করে—যদি তাদের নেতৃত্বের ভার আপনাকে দেয়, তবে তাতে আপনার আপত্তির কারণ কি আছে?

 আমি কলিকাতায় আপনাকে যে প্রশ্ন করিয়াছিলাম—তার মীমাংসা হইয়া গিয়াছে। তার মীমাংসা এই যে আপনি যদি আমাদের নেতৃত্বের ভার গ্রহণ না করেন তবে বাঙ্গলাদেশে এমন কেহ এখন নাই যাকে আমরা অন্তরের সহিত নেতা বা নেত্রী বলিয়া গ্রহণ করিতে পারি। কোনও সভায় সভাপতির কাজ চালাইবার জন্য কাহাকেও বরণ করিলে তাঁহাকে নেতা বলিয়া স্বীকার করা হয় না। তেমন নেতা বাঙ্গলাদেশে অনেক আছেন কিন্তু প্রকৃত নেতা—যাঁর কাছে হৃদয় সহজেই ভক্তিতে আনত হইয়া পড়ে—আজ বাঙ্গলাদেশে বিরল। যদি আপনাকে আমরা না পাই তবে এই লক্ষ্মীছাড়ার দলকেই আত্মপ্রতিষ্ঠার রাস্তায় চলতে হবে। আপনার আশীর্ব্বাদ আমাদের নিকট অমূল্য সম্পদ সন্দেহ নাই কিন্তু আমরা তদপেক্ষা বেশী কিছু চাই।

 আমরা এখানে একপ্রকার ভাল আছি। আমার বোনের শরীর পূর্ব্বাপেক্ষা ভাল। মা একরকম ভালই আছেন। আমার শরীর ক্রমশঃ সুস্থ হইতেছে—তবে weight তেমন বাড়িতেছে না। অবশ্য

৩৩৬