পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 মেসো মহাশয় ৮।৯ দিন হইল কলিকাতায় গিয়াছেন এবং সেখানে ভাল আছেন। তিনি খুব ডাব ভালবাসেন এবং বর্ত্তমান অবস্থায় ডাব তাঁহার খুব উপকারী। কিছু কলিকাতায় ভাল ডাব আনাইয়া তাঁহার নিকট পাঠাইয়া দিতে পারেন তাহা হইলে তিনি বড় উপকৃত হন, তিনি এ বিষয়ে আপনাকে লিখিতে বলিয়াছেন।

 এখানকার মঙ্গল জানিবেন। আপনারা সকলে ভাল আছেন শুনিয়া সুখী হইলাম। মেজদাদা কবে ফিরিবেন?

 বোধহয় মে মাসের মাঝামাঝি আমাদের পরীক্ষার খবর বাহির হইবে। কতদূর সত্য জানি না—তবে শুনিয়াছি ইতিমধ্যে অনেকে নম্বর পর্য্যন্ত জানিতে পারিয়াছে!

 সেজ দিদিরা কি আসিবেন?

 আমি এই অমূল্য ক্ষণস্থায়ী মানুষ জীবনের এত সময় নষ্ট করিয়া ফেলিলাম, তজ্জন্য মনে দিনরাত ভয়ানক কষ্ট হয়। সময়ে সময়ে অসহ্য বোধ হয়।

 যদি মানুষ জন্ম লাভ করিয়া মানুষজীবনের উদ্দেশ্য না সফল করিতে পারিলাম—যদি গন্তব্যস্থানে পঁহুছিতে না পারিলাম তবে আর কি হইল? যেমন সকল নদীর গন্তব্যস্থান সমুদ্র সেইরূপ সমস্ত জীবনের গন্তব্যস্থান—ঈশ্বর, যদি মানুষ ঈশ্বর লাভ না করিতে পারে তবে মানুষজন্ম বৃথা—আর পূজা, জপ, ধ্যান সবই বৃথা—সব কেবল ভণ্ডামী। এখন আর বাজে কথায় পর্য্যন্ত সময় নষ্ট করিতে ইচ্ছা হয় না—ইচ্ছা হয় কেবল একটা ঘরে বন্ধ হয়ে থাকি আর সমস্ত দিন সমস্ত রাত ধ্যান চিন্তা এবং পাঠে অতিবাহিত করি। দিন দিন যে আমরা যমমন্দিরের নিকটবর্ত্তী হইতেছি, কবে আর আমরা সাধনা করিব আর কবেই বা তাঁহাকে পাইয়া তাঁহার ক্রোড়ে শান্তিসুখ ও বিশ্রাম করিব। সে আনন্দময়কে না পাইলে কিছুতেই আনন্দ নাই। লোকে যে কি করিয়া টাকা, ধন-সম্পত্তি, বিষয় প্রভৃতি লইয়া সন্তুষ্ট থাকে তাহাও আমার নিকট সময়ে ২

২৪