পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দৃশ্য খুব সুন্দর পাওয়া যায়। তা ছাড়া দেখিবার কয়েকটী জিনিষ আছে। Observatory Hill, Botanical Gardens, Museum, Race Course, গোরাদের Barracks এবং Mount Sinchal গিয়াছিলাম। Mt. Sinchal থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা ত দেখাই যায়—তা ছাড়া Everestও দেখিলাম। সিঞ্চল প্রায় ৮৪০০ ফুট উচ্চ— সেখানে আজ সকালে গিয়াছিলাম। প্রায় ছয় মাইল Uphill. ভাগ্যচক্রে আকাশ পরিষ্কার ছিল এবং Everest দেখা গেল।

 তবে এ সহরটা হচ্ছে—“Calcutta transferred to the hills” এই যা দোষ। এখন নির্জ্জন—লোকেরা নেমে গেছে—তাই বেশ লাগছে।

 বারান্দা থেকে পরিষ্কার Snowview পাওয়া যায়। চারিদিকে পাহাড়, খালি পাহাড়—আর অভ্রভেদী হিমশিখর শুভ্রতুষার কিরীটী কাঞ্চনজঙ্ঘা। কত সুন্দর এ স্থান! ভাবিতে গেলে চোখে জল আসে। গগনের এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যন্ত শুভ্রতুষারময় গিরিমালা—তরঙ্গায়িত আকাশপৃষ্ঠে। বহুদূরে পর্ব্বতগাত্রে লামাদের বৌদ্ধ মঠ আছে, Extreme individualistic life যাপন করিতে গেলে পরিব্রাজকের জীবনের মত এত আনন্দময় জীবন নাই। ইচ্ছা করে পাহাড় দিয়ে সিকিম নেপাল চলিয়া যাইতে। তিব্বত যাইবার পথ আছে। সেখান দিয়ে ব্যবসা বাণিজ্যও চলে।

 কিন্তু পরিব্রাজকের জীবন যাপন বর্ত্তমান যুগে বঙ্গীয় যুবকের সাজায় না। তার স্কন্ধে গুরুতর কর্ত্তব্য রহিয়াছে।

 কার্সিয়ং-এ এক ভদ্রলোক আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন “কেমন enjoy করিতেছেন?” ভদ্রতার খাতিরে আমি উত্তর করিলাম “বেশ ভালই।” কিন্তু নিজ মনে হইল যে enjoyment-এর কাল গিয়াছে। মনে আছে ৮ বৎসর পূর্ব্বে যখন পূজার ছুটীতে—প্রথমবার দার্জ্জিলিঙ আসি তখন কি আনন্দ! আমরা বাড়ীতে একরকম বাঁধা থাকিতাম তাই বাড়ী ছাড়িব ভাবিয়া কি আনন্দ! তখন এসেছিলাম অবশ্য

৬৪