পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S ०२ পত্রধারা ইতিমধ্যেই, ২০২৫ বছর না যেতে যেতেই, প্রবহমান কালের ধাক্কায় তারা নড়ে চড়ে গেছে ; সামনের জিনিস পিছনে পড়ল, উপরের জিনিস নিচে পড়ল অমনি সেদিনকার অত দীপ্তিমান অত বেগবান উপলব্ধিও আজ অবাস্তব হয়ে দাড়াল, অন্তত অনেক লোকের পক্ষে বোঝা দুঃসাধ্য হয়েছে সেদিনকার ভালোলাগা কী করে সম্ভবপর হোলো। আজকের পাঠক সগর্বস্মিত হাস্তে ভাবছে সেদিনকার পাঠকদের মন ছিল নেহাত কাচা, এইজন্যেই সেই কাচ ভিতের উপর প্রতিষ্ঠিত সাহিত্য-বিচার স্থায়ী হোতে পারে না । নিজের মনের একান্ত উপলব্ধির মতে বাস্তব আমাদের কাছে আর কিছুই নেই। চোখে যেটাকে যা দেখছি সেটা যে তাই না হোতেও পারে এমন সন্দেহকে মনে স্থান দিলে বোধশক্তি সম্বন্ধে নাস্তিকতায় পৌছতে হয়—এতে কাজ চলে না। ভাগ্যক্রমে আমাদের দৈহিক চোখের বদল হয় না অথবা বহুলক্ষ বৎসরে হয়ে থাকে —তাই আমাদের আজকের দেখার সঙ্গে কালকের দেখার গুরুতর বিরোধ নেই, এই কারণে আমাদের দৃশুলোক ব’লে যে একটা স্থষ্টি আছে সেটাকে অন্তত সাধারণ লোকে মায়। বলতে পারে না । কিন্তু আমাদের দৈহিক চোখের স্নায়ু পেশি এবং তার উপকরণ যদি কেবলি নড়াচড়া করত তাহলে এই দেখার জগৎ আকাশের মেঘের মতো রূপান্তর ধরতে ধরতেই চলত। কিন্তু কালে কালে আমাদের মনের দৃষ্টির বদল চলছেই, আজ সেই দৃষ্টির যে সব উপকরণের ষোগে একটা বিশেষ অনুভূতি অত্যন্ত স্পষ্ট হয়েছে, এবং এত স্পষ্ট