পথে ও পথের প্রান্তে । ১৩৭ বনীয়তা। তখন সামনেকার যে অজানা ক্ষেত্রের ম্যাপ অঁাকী বাকি ছিল, মাইলপোস্ট বসানো হয় নি সেখানে, সম্ভবপরতার ফদ তলায় এসে ঠেকেনি। আমার শিলাইদহের কুঠি পদ্মার চর সেখানকার দিগন্ত-বিস্তৃত ফসল খেত ও ছায়ানিভূত গ্রাম ছিল সেই অভাবনীয়কে নিয়ে, যার মধ্যে আমার কল্পনার ডানা বাধা পায় নি। যখন শান্তিনিকেতনে প্রথম কাজ আরম্ভ করেছিলাম তখন সেই কাজের মধ্যে অনেকখানিই ছিল অভাবনীয়, কতব্যের সীমা তখন সুনির্দিষ্ট হয়ে কঠিন হয়ে ওঠেনি, অামার ইচ্ছ। আমার আশা আমার সাধনা তার মধ্যে আমার স্বষ্টির ভূমিকাকে অপ্রত্যাশিতের দিকে প্রসারিত ক’রে রেখেছিল—সেই ছিল আমার নবীনের লীলাভূমি— কাজে খেলায় প্রভেদ ছিল না । প্রবীণ এল বাইরে থেকে, এখানে কেজো লোকের কারখানাঘরের ছক কেটে দিলে, কতব্যের রূপ সুনির্দিষ্ট ক’রে দিলে, এখন সেইটের আদর্শকে নিয়ে ঢালাই পেটাই করা হোলো প্রোগ্রাম –হাপরের হাপানি শব্দ উঠছে, আর দমাদম চলছে হাতুড়িপেটা ৷ যথানির্দিষ্টের শাসন আইনেকামুনে পাকা হোলো, এখানে অভাবনীয়কেই অবিশ্বাস ক’রে ঠেকিয়ে রাখা হয়। যে পথিকটা একদিন শিলাইদহ থেকে এখানকার প্রান্তরে শালবীথিচ্ছায়ায় আসন বিছিয়ে বসেছিল তাকে সরতে সরতে কতদূরে চলে যেতে হয়েছে তার আর উদ্দেশ মেলে না—সেই মানুষটার সমস্ত জায়গা জুড়ে বসেছে অত্যন্ত পাকা গাথুনির কাজ। মাঝখানে পড়ে শুকিয়ে এল কবির যৌবন, বৈশাখে ।