পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথে ও পথের প্রান্তে * > তা পরক্ষণেই ভুলে যাই—ঐতিহাসিকের মতো ঘটনাগুলিকে দেশকালের সঙ্গে গেথে রাখতে পারিনে । তার মুশকিল আছে। তোমরা কেউ যখন আমার সম্বন্ধে কোনো নালিশ উপস্থিত করে তখন তোমাদের পক্ষের প্রমাণগুলোকে বেশ স্বসম্বন্ধ সাজিয়ে ধরতে পারো—আমার পক্ষের প্রমাণগুলো দেখি আমার আনমনা চিত্তের নানা ফঁাকের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে গেছে । আমি কেবল আমার ধারণা উপস্থিত করতে পারি। কিন্তু ধারণা জিনিসটা বহুবিস্মৃত প্রমাণের সম্মিলনে তৈরি। সে প্রমাণগুলোকে সপিনে দিয়ে সাক্ষ্যমঞ্চে আনা যায় না । ষাদের ধারণাগুলো শনিগ্রহের মতো বহু প্রমাণমণ্ডলের দ্বারা সব দাই পরিবেষ্টিত তাদের ধারণার সঙ্গে আমার ধারণার ঠোকাঠুকি হোলে আমার পক্ষেই তুর্বিপাক ঘটে। কিন্তু খবর সম্বন্ধে এতক্ষণ যে তত্ত্বালোচনা করলুম তাকে খবর বলা যায় না। কী দিয়ে আরম্ভ করব সেই কথা ভাবছি। আলেকজান্দ্রিয়ার থেকে খবরের ধারার মধ্যে এসে পড়েছি। যারা আমার ইজিপ্টের পালা জমাবার ভার নিয়েছিলেন র্তারা ইটালিয়ান, নাম “সোয়ারেস”, ধনী ব্যাঙ্কার। আমাকে তাদের যে বাগানবাড়িতে রেখেছিলেন সে অতি স্বন্দর। সে বারান্দাগুলো খুব দিলদরিয়া গোছের—একদিকে বাগান, আর-একদিকে নীল সমুদ্র, আকাশ মেঘশূন্য, সূর্যের জীলোয় স্যামল পৃথিবী ঝলমল করছে, সমস্তদিন নিস্তব্ধ নির্জন অবকাশের অভাব ছিল না। যেদিন সকালে পৌছলুম তার পরদিন সায়াহ্নে বক্তৃতা, সুতরাং মনটা গভীর বিশ্রামের মধ্যে