পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૧ পত্রধারা জায়গায় মন তার গায়ের মাপ পায়নি, চারদিকে এখানে ঠেকে ওখানে ঠেকে আর তার উপরে দিনরাত আদর অভ্যর্থনা গোলমাল । প্রতিদিনের ভাবনা কল্পনার মধ্যেই নতুনত্ব আছে, বাইরের নতুনত্ব তাকে বাধা দিভে থাকে। জীবনে আমরা যে কোনো পদার্থকে গভীর করে পেয়েছি অর্থাৎ অনেকদিন অনেক করে জেনেছি সত্যিকার নতুন তারি মধ্যে,—তাকে ছেড়ে নতুনকে খুজতে হয় না। অন্য সব মূল্যবান জিনিসেরই মতো নতুনকে সাধন করে লাভ করতে হয়। অর্থাৎ পুরোনো করে তবে তাকে পাওয়া যায়। হঠাৎ যাকে পেয়েছি বলে মনে হয়, সে ফাকি, দুদিন বাদেই তার যথার্থ জীর্ণতা ধরা পড়ে। আজকের দিনে এই সস্তা নতুনত্বের মৃগয়ায় মানুষ মেতেছে, সেইজন্যেই মুহুতে মুহূতে তার বদল চাই । তার এই বদলের নেশায় বিজ্ঞান তার সহায়তা করছে, সে সময় পাচ্ছে না গভীরের মধ্যে তলিয়ে গিয়ে চিরনূতনের পরিচয় পেতে। এই জন্যেই চারিদিকে একটা পুথিপড়া ইতরতা ব্যাপ্ত হয়ে পড়ছে। ধ্রুবসত্যকে সত্যরূপে পাবার সময় নেই, সময় নেই। সাহিত্যে যে অশ্লীলত। দেখা দিয়েছে তার কারণ এই ; অশ্লীলতা অতি সহজেই প্রবলবেগে মনকে আঘাত করে, যাদের সময় নেই ও শক্তি কম তাদের পক্ষে অতি দ্রুতবেগে আমোদ পাবার এই অতি সস্ত। উপায়। তীব্র উত্তেজন চাই সেই মনেরই পক্ষে যে মন নিজাব,যে মনের জীবনীশক্তি কমে গেছে অগভীর । মাটিতে—তার শিকড়গুলি উপবাসী। ইতি ৯ই চৈত্র, ১৩৩৫ । ,