পাতা:পথ ও পথের প্রান্তে - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পথে ও পথের প্রান্তে ৮১ ৷ আমি এবং সরকারী আমির মধ্যে একটা সামঞ্জস্য ছিল। অবশেষে দৈবছর্যোগে অসাধারণ ব’লে খ্যাতি বাড়তে লাগল, আমি যতটা বেসরকারী তার চেয়ে অনেক বেশি সরকারী হয়ে উঠলুম—যে আড়ালটুকুর অধিকার আমার ছিল তাতে এখন আর কুলোয় না। অত্যন্ত পাকা ফলের । মতো আমার উপরকার শক্ত খোসাটুকু সাতখানা হয়ে ফেটে গেছে, এখন যে-কোনো আগন্তুক পাখি যে মতলবেই হোক এসে ঠোকর দিতে পারে কোনো বাধা নেই । ক্ষতি ছিল না যদি এতে তাদের সত্যিকার উপকার হোত । আমার উপর দিয়ে তারা নিজেদের লোভ মিটিয়ে নিতে চায়, নিক –কিন্তু এতে আমার যে গুরুতর ক্ষতি হয় ভেবে দেখতে গেলে সে ক্ষতি তাদেরও । ছোটো ছোটো দাবির আঘাতে চিত্ত বিপর্যস্ত হয়, নিজের যথেষ্ট কাজ করবার শক্তির অপব্যয় হোতে থাকে। তা ছাড়া যখন বুঝতে পারি আমি অন্তের স্বার্থের বাহন হয়ে পড়েছি এবং সে স্বার্থও তুচ্ছ তখন বড়ো ধিক্কার লাগে, বড়ো ইচ্ছে করে আপনার সেই সাবেক খ্যাতিহীন ছোটো বাসার মধ্যে ফিরে যাই, এবং যারা কেবলমাত্র আমার অস্তিত্বের মূল্য দিতে প্রস্তুত আছে তাদের কাছেই আশ্রয় নিই। অথচ মাঝে মাঝে এমন লোকের সঙ্গে দেখা হয়, যারা আমার অপরিচিত, অথচ যারা দূরের থেকে আমাকে অস্তরের মধ্যে গ্রহণ করেছে। তারা আমার কাছে কিছুই চায় না—তারা খ্যাতির দ্বারা আমাকে বিচার করে না। তারা নিজের আনন্দের দ্বারা আমাকে স্বীকার করে। এর চেয়ে সৌভাগ্য o' W ፳ |