বাজিলে বাঁশী”, তখন তো আমি এক মুহূর্ত্তও ঘরে অপেক্ষা করিতে পারিব না। রাধিকা সর্পসঙ্কুল পথে চলা-ফেরা শিখিবার জন্য ভূজগ গুরুর (ওঝার) নিকট নিজ মণিময় কঙ্কণ-মূল্য (পণ) দিয়া সাপের মুখ কিরূপে বন্ধ করিতে হয়, তাহাই শিখিতেছেন; গুরু-জন যখন ভর্ৎসনা করেন, তখন তিনি বধির হইয়া থাকেন—যেন কিছুই শুনিতে পান না। বাহিরের লোক উপদেশ দিতে আসিলে, যেন তিনি তাঁহাদের কথা বুঝেন নাই—পাগলীর মত (মুগ্ধী) অকারণে হাসেন। এই সকলই সংসার হইতে বাহির হইবার যোগ্যতার্জ্জনের শিক্ষা এবং ইহা প্রেমের পথে তাঁহাকে পাইবার তপস্যা। কবি নিজেই ইহাকে সাধনা বলিয়াছেন (“দূর তর পন্থা গমন ধনী সাধয়ে”)।
মান
মানুষের যতগুলি ভাব প্রণয়-ব্যাপারে বর্ণিত হইয়াছে, তাহার সবগুলি কবিরা রাধা-কৃষ্ণ-লীলায় আরোপ করিয়াছেন। ধরুন—মান। কোথায় সেই অব্যক্ত, অনন্ত, শত শত বিশ্বের অধিপতি, সর্ব্বব্যাপী, সর্ব্বশক্তিমান্ ঈশ্বর—আর ধূলি-কণার কোটী-কোটীর অংশের একটি নগণ্য রেণুর মত মানুষ! সেই রেণু ভগবানের সঙ্গে মান করিবে এবং তিনি সেই রেণুর পা ধরিয়া মান ভাঙ্গাইবেন? সাধারণের নিকট এই তত্ত্ব সম্পূর্ণরূপে অনধিগম্য, সিন্ধুর সহিত বিন্দুর মান, ইহা শিশুর কল্পনা।
কিন্তু তিনি তো অণু হইতেও অনীয়ান্; এত বড় তিনি, কিন্তু ক্ষুদ্রের উপরও তাঁহার পূর্ণ দৃষ্টি, পূর্ণ ভালবাসা। পর্ব্বতের ছায়া বিশাল জলধির বক্ষে যেরূপ পড়ে, একটি ক্ষুদ্র জলবিন্দুর উপরেও তেমনই পূর্ণভাবে পড়ে। ক্ষুদ্রের নিকট তিনি ক্ষুদ্র। এই বিরাট্ বিশ্বের কর্ম্ম-