পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/১১১

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

পদাবলী-মাধুর্য্য

১০৫

ভাণ্ডার মুক্ত করিয়া দিতেছেন; সন্ন্যাসী তাহার নেংটী ছাড়িতেছে না, দিগম্বর সন্ন্যাসী সেই নেংটীটুকুও ফেলিয়া দিয়াছেন। এ যুগের প্রধান অস্ত্র অর্থের মুখ ভোতা হইয়া গেল, গান্ধিজী তাঁহার আটহাতী খদ্দর ছাড়িলেন না, এবং চার্চ্চহিলের কটুক্তি তাঁহার কাছে পুষ্পবৃষ্টির মত বোধ হইল।

 সুতরাং এবম্বিধ ত্বৎ-সমর্পিত প্রাণ—একান্তভাবে ত্বদগত ও ত্বদবলম্বিত ব্যক্তির মান ভাঙ্গিতে যে ভগবান ‍সাধ্যসাধনা করিবেন, বৈষ্ণবদের এই কল্পনার ভিত্তি-মূলে কতকটা পারমার্থিক সত্য নিহিত আছে, তাহা স্বীকার করিতে হইবে। বৈষ্ণবেরা নিবৃত্তির পথ মধুরাদপি মধুর করিয়াছেন—তাহা অনুরাগের দ্বারা পুষ্পাকীর্ণ করিয়া। মান-অধ্যায়ের ভূমিকা-স্বরূপ এইটুকু বলিয়া আমরা পদাবলীর উদ্যানে পুনরায় প্রবেশ করিব। বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাসগোবিন্দ দাসের পরে মান সম্বন্ধে কীর্ত্তনীয়ারা যাঁহাদিগকে প্রধানতঃ অবলম্বন করিয়া থাকে, রায়শেখরশশিশেখর তাঁহাদের অন্যতম।

 আমরা শশিশেখরের একটি পদ অবলম্বন করিয়া এই প্রসঙ্গ আরম্ভ করিব।

 প্রথমেই কীর্ত্তনীয়া সখীগণপরিবৃতা রাধাকে মানের অবস্থায় শ্রোতৃমণ্ডলীর কাছে উপস্থিত করিল। কৃষ্ণ তাঁহার পদযুগল ধরিয়া আছেন। শুক-শারী বিবাদ করিতেছে; একজন কৃষ্ণ-পক্ষে, অপরে রাধা-পক্ষে। সখীরা ব্যধিকাকে গঞ্জনা করিয়া বলিতেছে, “শ্যামকে না দেখিলে মরবি, দেখিলেও মান করবি” এই রকমের উক্তি; কিন্তু চিত্রার্পিতা মূর্ত্তির ন্যায় রাধা বসিয়া আছেন, মুখে কোন কথা নাই। আপনারা বাজারে এই ভাবের অনেক চিত্র দেখিয়া থাকিবেন। এদিকে “চরণ-নথ রমণী-রঞ্জন ছাঁদ। ভূতলে লুটাইল গোকুলচাঁদ”—এই পদটি লইয়া অনেক টীকাকার ভুলের একটি দস্তুর-মত