বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পদাবলী-মাধুর্য্য
১১৩

দেখিতেছেন। “গোঙার” শব্দটির আদি অর্থ “গোয়াল”। প্রাকৃত পিঙ্গলে “গোঙার” শব্দ এই অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে। কালে এই শব্দ অর্থদুষ্ট হইয়াছে, ‘গোঁয়াড়’ বলিতে এখন আমরা দুর্ব্বৃত্ত বুঝি।

 এই উত্তরে কৃষ্ণ একবারে মুসড়াইয়া পড়িলেন, তিনি বলিলেন—“আমি রাধার দাস, একবার করুণা করিয়া আমার একটি কথা শোন।” তখন বৃন্দা বলিতেছেন,

‘‘কি কহবি রে মাধব   তুরতহি কহ কহ
   হাম যাওব আন কাজে।
তো সঞে বাত   নহে মধু সমুচিত,
   দোষ পাওব সখী মাঝে।’’

 বাহিরের লোকে নিন্দা করিবে, বৃন্দা একথা বলে নাই। গোপীরা বাহিরের লোকের নিন্দা-প্রশংসা এড়াইয়া গিয়াছে। বৃন্দা বলিতেছে, যে রাধার মনে কষ্ট দিয়াছে—তাহার সঙ্গে কথা বলিলে সখীরা আমাকে ক্ষমা করিবে না। কৃষ্ণ বলিতেছেন—

‘‘কি কহব সজনি,   কহিতে বা কিবা জানি,
   রাই তেজল অভিমানী।
রাই তেজল বলি,   তুহুঁ সব তেজবি,
   তবে বিষ ভুঞ্জব আমি।’’

 বৃন্দার উত্তরে যেমনি শ্লেষ ফুটিয়াছে, তেমনই কৃষ্ণ চিরজীবী হইয়া বাঁচিয়া থাকুন, এই প্রার্থনা আছে। বলা বাহুল্য, এই প্রার্থনা গোপীর প্রাণের প্রার্থনা—আন্তরিকতাপূর্ণ।

‘‘আহিরিণী কুরূপিনী, গুণহীনী, ভাগিহীনী—
তাহে লাগি কাহে বিষ পিঅবি?
চন্দ্রাবলী সঙ্গসুখ সুধারস,
পিবি পিবি যুগে যুগে জীরবি!’’