বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পদাবলী-মাধুর্য্য.djvu/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৪২
পদাবলী-মাধুর্য্য

 বংশীবদন লিখিয়াছেন—“না যাইও না যাইনা রাই বৈস তরুমূলে, অসিতে পেয়েছ ব্যথা চরণ-কমলে” সেই চরণ-কমলে একটা কুশাঙ্কুর ফুটিলে তাহা কৃষ্ণের প্রাণে শেলের মত বিঁধে।

‘‘সিনান দুপুর সময়ে জানি
তপত পথেতে ঢালে সে পানি’’

 দ্বিপ্রহরে যমুনার সিকতাময় পুলিন রোদে তাতিয়া উঠে, রাধা কি করিয়া সেই উত্তপ্ত বালুকার পথে হাটিয়া স্নান করিতে আসিবেন! এজন্য কৃষ্ণ পূর্ব্ব হইতেই কলসী কলসী জল ঢালিয়া সেই পথ শীতল করিয়া রাখেন। রাধার প্রসাদী তাম্বুল পাইবার আশায় তিনি পথে হাত পাতিয়া থাকেন,

‘‘লাজে হাম যদি মন্দিরে যাই,
পদচিহ্ন তলে লুটে কানাই।
প্রতি পদচিহ্ন চুম্বয়ে কান,
তা দেখি আকুল ব্যাকুল পরাণ।’’

এই পথে কৃষ্ণের অশিষ্টতা দেখিয়া যদি রাধা লজ্জা পাইয়া গৃহে প্রবেশ করেন, তবে কৃষ্ণ সেই পদ-চিহ্নের উপর লুটাইয়া পড়েন এবং প্রতিটি পদ চিহ্ন চুম্বন করেন। ইহা দেখিয়া আমার প্রাণ আকুলি ব্যাকুলি করিতে থাকে।

‘‘সো যদি সিনাই আগিলা ঘাটে, পিছলি ঘাটে সে নায়।
মোর অঙ্গের জল পরশ লাগিয়া যাহ পসারিয়া রয়,
বসনে বসন লাগিবে লাগিয়া, একই রজক দেয়,
আমার নামের একটি আখর পাইলে হরিষে লেয়।
ছায়ায় ছায়ায় লাগিবে লাগিয়া ফিরই কতই পাকে,
আমার অঙ্গের বাতাস যে-দিকে সে-দিন সে-মুখে থাকে।
মনের কাকুতি বেকত করিতে কত না সন্ধান জানে,
পায়ের সেবক রায়-শেখর কিছু কহে অনুমানে।’’