তায়ই পাওয়া যায়। কিন্তু যে ভাবে পাওয়া যায়, তাহা ঠিক উদ্ধৃত পাঠের মত নহে, কাঠামোটা ঠিক রাখিয়া পরবর্ত্তী কবি চাল-চিত্রটা অনেকখানি বদলাইয়াছেন।
সুতরাং বলা যাইতে পারে “আমি পরাণনাথেরে স্বপনে দেখিনু” পদটিতে জ্ঞানদাস যেরূপ কতকটা যোগ করিয়া সৌষ্ঠব সাধন করিয়াছেন, এই পদেও তিনি তাহাই করিয়াছেন। পদগুলিতে তিনি নিজের ভণিতা দিতে গেলেন কেন?—এই প্রশ্ন হইতে পারে। সমালোচনার আদালতে মোকদ্দমাটি উপস্থিত করিলে, জ্ঞানদাস দোষী কি না নির্ণীত হইবে; আমি শুধু এই বলিব, যে প্রাচীন ছাঁচে ঢালাই করিয়া নূতন কবির নামের ছাপ দেওয়া হয়ত সেকালের রীতি ছিল। একথাও বলা চলে যে, গায়েনেরাই এই ভাবের ভণিতা দিয়াছেন, তজ্জন্য কবি দোষী নহেন। তাঁহারা তো ভণিতা লইয়া এরূপ খামখেয়ালী অনেক সময়েই করিয়া থাকেন। সেদিনও কবিওয়ালা এণ্টোনির গানে ইঁহারা “দ্বিজ এণ্টোনী বলে” এইরূপ ভণিতা দিয়া ফিরিঙ্গী কবিকে জাতে তুলিয়া লইয়াছেন।
এখনও কবিরা পূর্ব্ববর্ত্তী কবিদের রচনার উপর অধিকার স্থাপন না করেন, তাহা নহে। টেনিসনের রাউণ্ড-টেবিলের গল্পগুলি মোবিনিজিন গাথার অনেকটা পুনরাবৃত্তি।
অভিসার
চণ্ডীদাসের গানে অভিসারের পদ একরূপ নাই বলিলেও অত্যুক্তি হইবে না, অথচ বহুপূবর্ববর্ত্তী জয়দেবের পদে তাহা আছে। অলঙ্কারশাস্ত্রে ‘অভিসারিকা’ সম্বন্ধে অনেক নিয়ম ও রীতির উল্লেখ দৃষ্ট হয়। প্রোষিতভর্ত্তৃকা, খণ্ডিতা, কলহান্তরিতা সম্বন্ধেও অনেক আইনকানুন