পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেয়েকে চাকরি করতে দেবার ইচ্ছা কি নেই হরিপ্রসনের ? সে কি মেয়ের বিয়ের চেষ্টা করছে ? হরিপ্রসশন ছিল স্কুলে। পিয়ন বই-এ সই করে উমাই রেখেছিল চিঠিটা ! তার সম্পকে চন্দ্রনাথের প্রশনগলি৷ চন্দ্রনাথেরই অথবা অজিতের সেটা উমা ঠিক বঝে উঠতে পারে না। কিন্সত আর সে দ্বিধা করে না । একটা দরখাস্ত লিখে ফেলে নিয়ে খেয়ে বেরিয়ে যায় । দরখাস্ত পাঠিয়ে দেবার দেড় ঘণ্টা পরে চন্দ্রনাথ তাকে খাস কামরায় ডেকে পাঠায় । ব্যাপারটা বঝতে পারে উমা । অজিতের খাতিরে ছেলেবেলার গহশিক্ষককে খাতির করলেও তার অফিসের মেয়েকেরানী তাকে সে খাতির করতে প্রস্তত নয়। একটু যেন সবস্তি বোধ করে উমা।। চন্দ্রনাথকে প্রায় প্রৌঢ়-বয়সী বলা যায় । তার কথাবাতন্নি রকমসকম দেখে একেবারেই টের পাওয়া যায় না। তার ভোঁতা মগজে একটু বিদ্যা প্রবেশ করতে হরিপ্রসন্নকে একদিন রীতিমত যন্ধে করতে হত । গম্ভীর মখে তার দিকে তাকায় । তারপর আবার মাথা নামিয়ে মিনিট পাঁচেক নিজের কাজ চালিয়ে যায় । মাথা তলে বলে, দরখাস্ত দিতে এতদিন দেরি করলে কেন ? ঃ শরীর খারাপ ছিল । ঃ সে খবরটা তমি কিংবা তোমার বাবার তো জানানো উচিত ছিল আমাকে ? এক মহতে উমা মন স্থির করে ফেলে। * সাপটি দঢ় কণ্ঠে বলে, আপনাকে সত্যি কথা খালে বলি। বাবা জানেন, আমি অ্যাপিলকেশন দিয়ে গিয়েছি। আমিই ইতস্ততঃ করছিলাম, চাকরি করব কি না । একটি প্রসন্নভাবেই চন্দ্রনাথ এবার যেন তার দিকে তাকায় । মাথা নামিয়ে আবার মিনিট কয়েক নীরবে নিজের কাজ চালিয়ে যায়। দামী পেনাটা দামী দোয়াতদানীতে রেখে বলে, চাকরি করাই ঠিক করলে ? যাক, গে, তোমার ব্যক্গিত ব্যাপার আমার জানিবার দরকার নেই । তোমার অ্যাপ্লিকেশন মঞ্জর করার আগে তোমায় দি একটা কথা বলে রাখছি। একবার কেসে পাইপ ধারায় । পাইপ ধরিয়ে আরেকবার কাসে । ঃ মাস্টার মশায়ের জন্য তোমাকে এই চাকরি দেওয়া-অনেক বেশী কোয়ালিফিকেসান নিয়ে কত ছেলে হত্যা দিয়েছে তার সংখ্যা নেই। তবে তোমার কোয়ালিফিকেসানেই কাজ চলে যাবে - - নইলে অবশ্য মাস্টার মশায়ের খাতিরেও এ কাজটার জন্য তোমায় TRES IR উমার হাসি পায় । নিজের ইচ্ছায় ছেলেবেলার মাস্টার তার বাবাকে খাতির করেই যেন চন্দ্রনাথ তাকে চাকরিটা দিচ্ছে ?