পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ক্লাশের পরীক্ষায়, আরও পড়ার জন্য বায়না করে করে যদি না মার খেত মায়ের হাতে আর সেই গলপ কানে না যেত গোপালমামার, নিজে সে যদি না গোপালমামাকে বঝিয়ে দিত যে সামান্য একটা ভুলের জন্য কিভাবে ফাস্ট হওয়া ফসকে গিয়ে তাকেও থাড হতে হয়েছে, সারাক্ষণ যদি সকল, পড়া আর পরীক্ষাব্য কথা বলে কান ঝালাপালা করে না দিত গোপালমামার -- তাকে পড়বার ঝোঁকােটা কি আকাশ থেকে অসত তার ? বত্তি না পেলে এবং স্কুল নিজের সবাথে তাকে বাগিয়ে রাখার জন্য ফ্রি-শিপ না দিলে গোপালমামাও কি উচুদিকের পড়ার মোটা খরচ বইতে রাজা হত ? কিন্ত নিজের চেষ্টায় সে যাই করে থােক আর গোপালমামারা যতই করে থাক তার জন্য, অজিত না থাকলে কতটুক সাৰ্থক হত তার এত কন্টে এতগলি পরীক্ষা পাস করা ! চাকরির চেষ্টা করতে নেমেই যেন দেয়ালে কপাল ঠাকে গিয়েছিল। উমার। নিভেজাল খাঁটিী চাকরি শােধ জোটানোই কঠিন ব্যাপার নয়, ওরকম চাকরির বাজারে তার দাম অতি সামান্য । বেশী টাকার চাকরি হলে সেটা আবার ঠিক চাকরি নয়, মালিকের সঙ্গে অন্যরকম সম্পকটাই আসল, চাকরিটা আনষঙ্গিক । অজিত তাকে দয়া না করলে, তাকে এই চাকরিটা জটিয়ে না দিলে, কতদিনে কিভাবে নিজের খাঁটি মাল্য আদায় করতে পারত কে জানে ! সতরাং উমার যে কৃতজ্ঞতার অভাব আছে তা নয় । অজিতের জন্যই চাকরিা-এটা তার জানা কথা। ওসব হিসাব নিকাশে সে ভাবপ্রবণতা টানে না । কিন্ত নিজের হিসাব কষবার সময় এই জানা কথাটিই সে অন্যভাবে ধরে । একজন এভাবে চাকরি করে দেবে এটাই সাধারণ নিয়ম । তায় মািল) আছে এটাই আসল কথা । মল্যােটা ষে একজন পাইয়ে দিয়েছে সেটা আলাদা প্রশন ! গলির মখে চন্দ্রনাথ তাদের নামিয়ে দেয় । গলির মধ্যে গাড়ী ঢািকবে না । উমা বলো, নেমে একটু চা খেয়ে যাবেন না ? ঃ শািন্ধ যদি চা খাওয়াও তবে নামতে পারি। ঃ তাই খাবেন । হরিপ্রসঙ্গেনির বৈঠকখানা বলে কিছ নেই, দাখানা ঘরই সম্প্ৰবল ন’জন মানষের । উমার পড়াশোনার জন্যই শািন্ধ একটি টেবিল আর চেয়ারকে ঘরে ঠাই দিতে Ez এবার অবশ্য অন্য ব্যবস্হা হবে । উমার নিজের জন্যই তো একখানা ঘর দরকার হবে এবার । বসন্ত এখানে থাকে না। তাই এতদিন কোন রকমে চলে গিয়েছে । বিয়ে না। করলেও কলকাতায় তার চাকরি হলে আগেই অন্য বাসা খাঁজে নিতে হাত-চাকরে ছেলেকে কি আর একটা ঘরে ভিড়ের মধ্যে ঘাড় গজে থাকতে দেওয়া যেত ! এবার বাসা খাজতে হবে চাকরে মেয়ের জন্য ।