পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঃ বলে দিলেই হতে পারবেন না । সব কাঞ্চােট চুকে যেত । আপনি না বলেন নি, বাড়িতে সবাই ধরে নিয়েছে তাহলে আর ভাবনা কিসের ? বাড়ি গিয়ে সকলের হড়িমখি দেখব, বাবা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবে, মা কে’দে কেটে অনথা করবে অনিল হঠাৎ কথা থামিয়ে সরে পালটে বলে, যাক গে, যাক । এতে আর কি আসবে যাবে। একটা কিছ জাটে যাবে নিশ্চয় ! চাকরিটা পাবে নিশ্চিত ছিল, কিন্ত পায়নি। পায়নি বলেই যে পেয়েছে তার বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করে আসাটা বড়ই খাপছাড়া ঠেকছিল উমার । অনিল যাই বলক, ভাদুঘরের একজন শিক্ষিত ছেলে-কথায় ব্যবহারে দ-এক মিনিটের মধ্যে টের পাওয়া গিয়েছিল যে ছেলেটি কান্ডাজ্ঞান-সম্প্রপশনও বটে-এ রকম নাটকীয় কাজ করে বসবে, এটা বরদাস্ত হচ্ছিল না। উমার। এবার সে বঝতে পারে ব্যাপারটা । নিজের জন্য নয় { চাকরিটা না পাওয়ায় বিব্রত হলেও এবং হতাশা জাগলেও সেটা তাকে এভাবে তার বাড়িতে টেনে আনত না। সনিশ্চিত চাকরিটা সে পায়নি জেনে বাড়ির লোকে কি কান্ড শর করবে। এই কলপনা তার কাপডভজ্ঞান টলিয়ে দিয়েছে । সকলের হাঁড়িমখি! মা'র কােম্পনাকাটি ! তার মানে উমা জানে । আহা বেচারা ! কিন্তু, বেশীক্ষণ বেচারা ভাববার সংযোগ অনিল তাকে দেয় না । চন্দ্রনাথ কিন্ত তার কথাটা অন্যভাবে নিয়ে আরও চটে যায়। বলে, তোমার ব্লােবা বার বার ভিক্ষকের মত আসবে - অনিল পাংশ মাখে শান্ত দঢ় কণ্ঠে বলে, আমিও তাই বলছি । বাবাকে ভিক্ষকের মতই তাড়িয়ে দিলেন না কেন ? কিছই বলার থাকত না । ঃ কিছ জানো না বোঝা না, তোমার ওই এক কথা ! সাফ জবাব দিলেন না কেন, তখন বলে দিলেই হত ! বলেছিলাম কি বলিনি তুমি জানো ? প্রমোদ কিভাবে চিরকাল আশা করেছে আর আমার ঘাড় ভেণ্ডেগছে। খবর রাখো ? অপমান করলেও প্রমোদ গায়ে মাখে না, বার বার আসে ; আমারই শেষ পযন্ত দিয়া হয় –মানে, যতই হোক ছেলেবেলার বন্ধ তো, মায়া না করে পারি না। বাড়ি গিয়ে প্রমোদকেই জিজ্ঞাসা করো, আমি স্পষ্ট বলেছিলাম কি না, এ চাকরিটা তোমায় দিতে পারবো না। তব, যদি সে আশা করে থাকে, সেটা কি আমার দোষ ? অনিলের পাংশ মাখ ক্ৰমে ক্ৰমে লাল হয়ে উঠছে দেখে উমা বড়ই অস্বস্তি বোধ করে। অনিলকে সে স্মরণ করিয়ে দেয়, আপনি কিন্ত কথা দিয়েছেন আমায় বিব্রত করবেন না ! অনিল মাথা হেট করে খানিকক্ষণ ভেবে বলে, আপনাকে কিছু বলিনি। আমি চলে যাচিছ, নমস্কার । �୪