পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাতেই তার মেজাজ এমন বিগড়ে গেল ? সস্নেহে তাকে তার গণের দাম পাইয়ে দেবার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও ? তাই কখনো যায় ! পাগল হতে না বসলে মেজাজ কারো এমন আবোল তাবোেল চড়ে নামে না । ਦਿਣ বানিয়ে বানিয়ে ফেনিয়ে ফেনিয়ে কি যে মাঘ আবোল তাবোল কথা লেখা হয় উপন্যাসে। না আছে খাপছাড়া উদ্ভট মানযোগালোর কথা আর কাজের সঙ্গতি, না আছে ঘটনাগলির কোন সামঞ্জস্য । কয়েক পাতা পড়তে পড়তেই হাই ওঠে উমার । সেই পাতাটি কোণ মড়ে বই বন্ধ করে রেখে পাশ ফিরে চোখ বঞ্জে শহয়ে সে। ঘামিয়ে পড়ে । একথাও অবশ্য ঠিক যে ঘামিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তত হবার সময় ছাড়া সে কখনো উপন্যাস পড়তে চেষ্টা করে না । তার সময় কই ? পরীক্ষায় পজিসন পেতে হলে যে বইগলি পড়তেই হবে, শািন্ধ, পরীক্ষা পাসের জন্য নিদিষ্ট সেই বইগলি ভাল করে পড়ার জন্য যথেষ্ট সময় মেলে না, সকলেও মেলে না, কলেজেও মেলে না-পড়ার বই পড়ে নিয়ে ঘমোতে যাবার আগে ছাড়া উপন্যাস পড়বার সত্যই তার সময় কই ? a পরীক্ষার আগে ঘািম ঠেকিয়ে পড়ার বই অবশ্য পড়তে হয়। --না পড়ে উপায় কি ? ঘািম ঠেকিয়ে জোর করে উপন্যাস পড়ার কোন মানে সে খাঁজে পায় না । কি লাভ এইসব সক্ৰিটছাড়া উদ্ভট বানানো মানষের আজগবেী কাহিনী পড়ে ? পড়ার কন্টটাই সার। কিছুই শেখা যায় না, জানা যায় না। আসল ব্যাপারটা তো সেই একটা ছেলে আর একটা মেয়ের ভালবাসা কিংবা একটা চোব অথবা খনীর সঙ্গে বন্ধির পরীক্ষায় শেষ পর্যন্ত একজন ডিটেকটিভের জিতে যাওয়া । তবে অনেকে উপন্যাস পড়ে, তাই ঘমোতে যাবার আগে যা হাতের কাছে পায় পড়ে দেখবার চেষ্টা করে উমা । যেটক পড়ে তাই তার নিজের পক্ষে যথেষ্ট মনে হয় । দাঁচায়খানা উপন্যাস পড়তে শৱ করে অবশ্য আর ছাড়তে পারেনি-পরীক্ষার পড়ার মতই রাত জেগে শেষ করেছে। শেষ করেও ঘমোতে পারেনি বহনক্ষণ । মনে যেন এসেছে কেমন অদ্ভুত চিন্তার আলোড়ন, হািদয়ে যেন জোয়ার এসেছে আবেগ অনভিতির বিচিত্র সমারোহে। যাই হোক, মোট কথা, উপন্যাস পড়তে ভাল লাগে না উমার ; কেইশ বছর বয়সী। হল আর যে কোনদিন ভাল লাগবে সে ভবাসা নেই! আজ কিশত নিজেকে উপন্যাসের নায়িকার মতই মনে হয়। উমার ! 8O