পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলতে বলতে বাকল কাঁদে । চোখ মাছতে মছতে কেসে কেসে বদ্ধ গলা সাফ করে নেয় । বিনয় কথা বলে না । সন্তা প্রেমিকের মত পরনের দামী লঙ্গির খাটে তার চোখের জল মছিয়ে দেবার চেষ্টাও করে না । কিছুক্ষণ পরে কান্না থামিয়ে কাতর ভাবে এই বলে বকল তার বণনা শেষ করে : থাকগে কাজ নেই। এমন বিশ্ৰী লাগছে আমার । সকলের খ্যাঁচ-খেচানিতে এ রকম বিশ্ৰী লাগবে। আর সারা জীবন তোমায় জবালাবা-থাকগে, কােজ নেই । বিনয় শান্ত সরে বলে, অনিল একটা বোনকে সামলেছে-তোমাকে সামলানোর জন্য একটা চড় মেরে গাল ফাটিয়ে দেব। কিনা ভাবছি । বড় বড় চোখে ককােল চেয়ে থাকে । ঃ গাল কেন ফাটিয়ে দিলাম না জানো ? ওই গালেই সােয়াজীবন আমায় চুমো খেতে হবে বলে । মাথা হে’ৰ্ট করে মিনিট পাঁচেক চুপচাপ থেকে বিকল মাদাগাস্বরে বলে, মিছে কথা বললে । মন ভোলাতে বললে । শিশ, আর মেয়ে বোনের গালে লোকে চুমা দেয়বৌয়ে গালে দ্যায়? নাকি ? বকলের মাথায় হাত রেখে বিনয় বলে, কেন ভাবিছ ? আমি তোমায় সখী করব বকল { ঃ আমার মনটাই যে বিগড়ে যাচ্ছে । তুমি আমি সখী হব-জগৎ সংসার বেন। পিছনে লেগেছে আমাদের । আমার যে কী ভয় করছে, কত ভাবনা হচ্ছে তমি ত্য বুঝবে না : বঝিয়ে শনিয়ে সামলে সামলে বকলকে সে বাড়িতে ফেরত পাঠায় কিন্ত ব্যাপারটা বঝে শানে হিসাব-নিকাশ করতে বসে বিনয়ের বিশ্ৰী কম একটা হতাশা জাগে। আরও অনেক বছর বয়স না বাড়লে, আরও অনেক অভিজ্ঞতাৰ শিক্ষা সম্প্রচয় না করলে, জীবনের সেরা বছরগলি জানতে বৰ্ব্বতে ব্যয় না করলে, তার পক্ষে বোঝাই সম্ভব নয় যে বাকলকে বিয়ে করে বকলকে সখী করতে পারবে কিনা, নিজে সখী হতে পারবে কিনা ৷ কেন ? কেন এই অনিয়ম ? জীবন্ত মানষের পক্ষে জীবন-বিরোধী নিয়ম ? বকল আসে না । গিয়ে ককালের সঙ্গে দেখা করে কথা বলারও উপায় নেই! তার পক্ষ থেকে প্রস্তাব গিয়েছে, ককােলকে সে বিয়ে করবে। (S