পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্ক্ৰপ্ৰস্তু অজিতের সম্পকে উমার অবশ্য আর কোন মোহ ছিল না। অজিত এসে পয়ে ধরে সাধিলেও সে বোধহয় তার সঙ্গে কোন রকম সম্পক রাখতে রাজী হত না । কিন্ত মানষের মনের ব্রুিয়া আর প্রতিক্রিয়ার রীতিনীতিই এক অদ্ভুত ব্যাপার। নইলে মন নিয়ে মাথা ঘামাতে শার করে সারাজীবন গবেষণা চালিয়ে জগদ্বিখ্যাত পণ্ডিতেরা কি এরকম হিমসিম খেয়ে যেত।-এতরকম থিয়োরী চাল, হত মনের ব্যাপার নিয়ে ? হঠাৎ একদিন ডাকে অজিতের একটি পত্র আসে। রেজিষ্টি করা পত্র-অ্যাক নলেজমেন্ট ডিউ । অজিত নাকি বিয়ে করবে ! কৈফিয়ত দেয় নি, উমাকে একটু বঝিয়ে দেবার চেষ্টা করেছে যে এতে কোন দোষ নেই । জীবনের আর দশটা প্রয়োজনের মতই এও শােধ প্রযোজন মেটানো ( মিখা রাগঅভিমানের বশে উমা আরও পড়ার, নিজের উন্নতি করার সংযোগ ত্যাগ করেছে -এটা ভুল। তব, সংসাবে সাধারণভাবে জীবনে সখী হবার পথে উমার কোন বাধা নেই, সেও ইচছা করলে তার পছন্দমত একজনকে বিয়ে করতে পারে। তাতে কোন অপরাধ হবে না। --প্রেমের দেবতার কাছেও নয় । বেচে থাকা এক ব্যাপার-ভালবাসা অন্য ব্যাপার। ভালবাসা দলঙ-জটিল না। বলে বৈরাগ্যের মানে হয় না । উমার কাছে অদ্ভুত মনে হয় চিঠি লিখবার ধরণটা । বোঝা যায়, অনেক মােসাবিদ্যা করে অজিত চিঠিখান! দাঁড় করিয়েছে । কায়দা করে ঘরিয়ে ফিরিয়ে কেবল আভাসেইঙ্গিতে নিজের বক্তব্যটা সে বোধগম্য করার চেষ্টা করেছে উমার কাছে । অন্য লোকে পড়লে কিছই বািকবে না। এ চিঠির মানে । পড়ে তাদের মনে হবে, ঠিক যেন বিভ্রান্তা কোন কমাবী আত্মীয়াকে কিছ উপদেশ দিয়েছে । বার তিনেক চিঠিখানা পড়ে হঠাৎ উমার চোখ খালে যায় । তাই বটে, ঠিক ! সযত্নে আইন বাঁচয়ে মােসাবিদ্যা করা চিঠি-কোনদিন কোন কারণে রাগ বা প্রতিহিংসার জেদের বশে মরিয়া হয়ে উঠলেও উমা যাতে এই চিঠির অস্ত্র দিয়ে তাকে জব্দ করতে না পারে । কত হিসাব অজিতের ! উমা তাড়াতাড়ি ট্রাঙ্ক খোলে, অজিতের পরোনো চিঠিগলি বার করে প্রত্যেকটি অঙ্গৰ তন্ন করে পড়ে । তাই বটে, ঠিক ! প্রত্যেকটি মানসিক ভালবাসার প্রেমপত্ৰ ! al পরাধীন-৫