পাতা:পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Yiff বলিয়া সে ঈষৎ লজ্জিত-মুখে প্ৰস্থান করিল। দ্বারের বাহিরে গিয়াই আবার ফিরিয়া আসিয়া বসিল । তাহার দিদি বলিলেন, আবার বসলি যে ? গিরীন হাসিমুখে বলিল, অত ললিতা যে কঁদুনি গাইলে দিদি, হয় সব সত্যি নয় । মনোরমা বিস্মিত হইয়া বলিলেন, কেন ? গিরীন বলিতে লাগল, ওদের ললিতা যে রকম টাকা খরচ করে, সে তো দুঃখীর মত মোটেই নয়, দিদি । সেদিন আমরা থিয়েটার দেখতে গেলুম ; ও নিজে গেল না, তবু দশ টাকা ওর বোনকে দিয়ে পাঠিয়ে দিলে। চারুকে জিজ্ঞেস কর না, কি রকম খরচ করে ; মাসে কুড়ি পাঁচিশ টাকার কম ওর নিজের খরচই চলে না যে! মনোরমা বিশ্বাস করিলেন না । চারু বলিল, সত্যি মা । ও-সব শেখরবাবুর টাকা ; শুধু এখন নয়, ছেলেবেলা থেকে ওই শেখরদার আলমারী খুলে টাকা নিয়ে আসে-কেউ কিছু বলে না । মনোরম মেয়ের দিকে চাহিয়া সন্দিগ্ধভাবে জিজ্ঞাসা করিলেন, টাকা আনে, শেখরবাবু জানেন ? চারু মাথা নাড়িয়া বলিল, জানেন। সুমুখেই চাবি খুলে নিয়ে আসে। গেল মাসে আন্নাকালীর পুতুলের বিয়েতে অত টাকা কে দিলে ? সব ত সই দিলে। মনোরম ভাবিয়া বলিলেন, কি জানি । কিন্তু এ কথাও ঠিক বটে, বুড়োর মত ছেলেরা অমন চামার নয়—ওরা সব মায়ের ধাত পেয়েছে— তাই, দয়া-ধৰ্ম্ম আছে। তা’ ছাড়া, ললিতা মেয়েট নাকি খুব ভাল, ছেলেবেলা থেকে কাছে কাছে থাকে, দাদা বলে ডাকে, তাই ওকে মায়া-মমতাও সবাই করে। হাঁ চারু, তুই ত যাওয়া-আসা করিস,