পাতা:পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

5 ዓ ওদের শেখরের এই মাঘ মাসে নাকি বিয়ে হবে ? শুনেছি, বুড়ো অনেক টাকা পাবে। চারু বলিল, হঁ্যা মা, এই মাঘ মাসেই হবে, সব ঠিক হয়ে গেছে ।

  • 5

গুরুচরণ লোকটি, সেই ধাতের মানুষ-যাহার সহিত যে-কোনও বয়সের লোক অসঙ্কোচে আলাপ করিতে পারে। দুই-চারিদিনের আলাপে গিরীনের সহিত র্তাহার একটা স্থায়ী সখ্যতা জন্মিয়া গিয়াছিল। গুরুচরণের চিত্তের বা মনের কিছুমাত্র দৃঢ়তা ছিল না বলিয়া তর্ক করিতেও তিনি যেমন ভালবাসিতেন, তর্কে পরাজিত হইলে ও তেমন কিছুমাত্র অসন্তোষ প্ৰকাশ করিতেন না। সন্ধ্যার পর চা খাইবার নিমন্ত্রণ তিনি গিরীনকে করিয়া রাখিয়া ছিলেন। আফিস হইতে ফিরিতেই তঁহার দিবা অবসান হইয়া যাইত। হাত-মুখ ধুইয়াই বলিতেন, ললিতে, চা তৈরী হ’ল মা ? কালী, যা যা, তোর গিরীনামামাকে এইবার ডেকে আন! তার পর উভয়ে চা খাওয়া এবং তর্ক চলিতে থাকিত। ললিতা কোন কোন দিন মামার আড়ালে বসিয়া চুপ করিয়া শুনিত। সেদিন গিরীনের যুক্তি-তর্ক শতমুখে উৎসারিত হইতে থাকিত। তর্কটা প্ৰায়ই আধুনিক সমাজের বিরুদ্ধেই হইত। সমাজের হৃদয়হীনতা, অসঙ্গত উপদ্রব এবং অত্যাচার-এ সমস্তই সত্য কথা । একে ত সমর্থন না করিবার বাস্তবিক কিছু নাই, তাহাতে গুরুচরণের উৎপীড়িত অশান্ত হৃদয়ের সহিত গিরীনের কথাগুলা বড়ই