পাতা:পরিণীতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

s পরিণীতা হঠাৎ দ্বারের বাহিরে মায়ের কণ্ঠস্বর শুনা গেল।--তিনি ডাকিয়া বলিতেছেন, কই রে, এখনও হাত-মুখ ধূসনি-সন্ধ্যা হয় যে! শেখর ব্যস্ত হইয়া উঠিয়া পড়িল এবং তাহার মুখের উপর মায়ের দৃষ্টি না পড়ে, এইভাবে সে ঘাড় ফিরাইয়া রাখিয়া তাড়াতাড়ি নীচে নামিয়া গেল । এই কয়টা দিন অনেক কথাই অনেক রকমের রূপ ধরিয়া তাহার মনের মধ্যে অনুক্ষণ আনাগোনা করিয়াছে, শুধু একটা কথা সে ভাবিয়া দেখিত না, বস্তুতঃ দোষ কোন দিকে। একটি আশার কথা সে আজ পৰ্য্যন্ত তাহাকে বলে নাই ; কিংবা তাহাকে বলিবারও সুযোগ দেয় নাই। বরঞ্চ পাছে প্ৰকাশ পায়, পাছে সে কোনরূপ দাবী করিয়া বসে, এই ভয়ে কাঠ হইয়াছিল। তথাপি সর্বপ্রকারের অপরাধ এক ললিতার মাথায় তুলিয়া দিয়াই সে তাহার বিচার করিতেছিল এবং নিজে হিংসায়, ক্ৰোধে, অভিমানে, অপমানে পুড়িয়া মরিতেছিল। বোধ করি এমনি করিয়াই সংসারের সকল পুরুষ বিচার করে এবং এমনি করিয়াই দগ্ধ হয় । • পুড়িয়া পুড়িয়া তাহার সাতদিন কাটিয়াছে, আজিও সন্ধ্যার পর নিস্তব্ধ ঘরের মধ্যে সেই আগুন জ্বালিয়া দিয়াই বসিয়াছিল, হঠাৎ দ্বারের কাছে শব্দ শুনিয়া মুখ তুলিয়াই তাহার হৃৎপিণ্ড লাফাইয়া উঠিল। কালীর হাত ধরিয়া ললিতা ঘরে ঢুকিয়া নীচে কার্পেটের উপর স্থির হইয়া বসিল । কালী বলিল, শেখরদা, আমরা দু’জনে তোমাকে প্ৰণাম করতে এসেছি।--কাল আমরা চলে যাবো । শেখর কথা কহিতে পারিল না, চাহিয়া রহিল । কালী বলিল, অনেক দোষ অপরাধ তোমার পায়ে আমরা করেচি শেখরদা, সে-সব ভুলে যেয়ো। শেখর বুঝিল, ইহার একটি কথাও কালীর নিজের নহে, সে 外闵一红