পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
৯৮


উচ্ছিষ্ট ফেলে’ রেখে গেছেন, এই আমাদের নেড়েচেড়ে গুছিয়ে গাছিয়ে খেয়েদেয়ে, আবার ছেলেদের জন্যে রেখে যেতে হবে। ওরা খাবে কি? ধারকর্জ্জ ক’রে খাবে। নইলে আর ব্যাটাদের ছোটলোক বলেছে কেন?” ঘৃণায়, লজ্জায়, ক্রোধে, ক্ষোভে রমেশের চোখ-মুখ উত্তপ্ত হইয়া উঠিল, কিন্তু, কণ্ঠস্বর শান্ত রাখিয়াই বলিল,—“আপনি যখন কিছুই কর্‌বেন না ব’লে স্থির করেছেন, তখন এখানে দাঁড়িয়ে তর্ক ক’রে লাভ নেই। আমি রমার কাছে চল্‌লুম, তার মত হ’লে আপনার একার অমতে কিছুই হবে না।”

 বেণীর মুখ গম্ভীর হইল; বলিলেন,—“বেশ, গিয়ে দেখ গে, তার আমার মত ভিন্ন নয়। সে সোজা মেয়ে নয় ভায়া,—তাকে ভোলানো সহজ নয়। আর তুমি, ত ছেলেমানুষ, তোমার বাপকেও সে চোখের জলে নাকের জলে ক’রে তবে ছেড়েছিল! কি বল খুড়ো?” খুড়ার মতামতের জন্য রমেশের কৌতূহল ছিল না; বেণীর এই অত্যন্ত অপমানকর প্রশ্নের উত্তর দিবারও তাহার প্রবৃত্তি হইল না; সে নিরুত্তরে বাহির হইয়া গেল।

  প্রাঙ্গণে তুলসীমূলে সন্ধ্যার প্রদীপ দিয়া প্রণাম সাঙ্গ করিয়া রমা মুখ তুলিয়াই বিস্ময়ে অবাক্‌ হইয়া গেল। ঠিক সম্মুখে রমেশ দাঁড়াইয়া। তাহার মাথার আঁচল গলায় জড়ানো। ঠিক যেন সে এইমাত্র রমেশকেই নমস্কার করিয়া মুখ তুলিল। ক্রোধের উত্তেজনায় ও উৎকণ্ঠায় মাসীর সেই প্রথম দিনের