বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
১৬২


সত্যিই যদি একদিন আমার মাথাটা ফাটিয়ে দেয়? মেয়েমানুষের সঙ্গে কাজ কর্‌তে গেলেই এই দশা হয়।” বলিয়া বেণী ভয়ে, ক্রোধে, জ্বালায় মুখখানা কি একরকম করিয়া বসিয়া রহিল। রমা স্তম্ভিত হইয়া রহিল। বেণীকে সে ভালমতেই চিনিত, কিন্তু, এত বড় নির্লজ্জ অভিযোগ সে তাহার কাছেও প্রত্যাশা করিতে পারিত না। কোন উত্তর না দিয়া, কিছুক্ষণ দাঁড়াইয়া থাকিয়া, সে অন্যত্র চলিয়া গেল। বেণী তখন হাঁক-ডাক করিয়া গোটা দুই আলো এবং ৫।৬ জন লোক সঙ্গে করিয়া আশে-পাশে সতর্ক দৃষ্টি রাখিয়া ত্রস্ত ভীতপদে প্রস্থান করিল।


১৭

 বিশ্বেশ্বরী ঘরে ঢুকিয়া অশ্রুভরা রোদনের কণ্ঠে প্রশ্ন করিলেন,—“আজ কেমন আছিস্‌ মা রমা?” রমা তাঁহার মুখের পানে চাহিয়া একটুখানি হাসিয়া বলিল,—“আজ ভাল আছি জ্যাঠাইমা।” বিশ্বেশ্বরী তার শিয়রে আসিয়া বসিলেন এবং মাথায় মুখে হাত বুলাইতে লাগিলেন। আজ তিনমাসকাল রমা শয্যাগত। বুক জুড়িয়া কাসি এবং ম্যালেরিয়া বিষে সর্ব্বাঙ্গ সমাচ্ছন্ন। গ্রামের প্রাচীন কবিরাজ প্রাণপণে ইহার বৃথা চিকিৎসা করিয়া মরিতেছে। সে বুড়া ত জানে না, কিসের অবিশ্রাম আক্রমণে তাহার সমস্ত স্নায়ুশিরা অহর্নিশি পুড়িয়া খাক্‌ হইয়া যাইতেছে। শুধু বিশ্বেশ্বরীর মনের মধ্যে একটা সংশয়ের ছায়া ধীরে ধীরে গাঢ়