পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পল্লী-সমাজ
২৪


রুদ্ধনি:শ্বাস ত্যাগ করিলেন। ধর্ম্মদাস-দা’র তখনও শেষ হয় নাই, এবং যদিচ তাঁহার অব্যক্ত কণ্ঠস্বর সন্দেশের তাল ভেদ করিয়া সহজে মুখ দিয়া বাহির হইতে পারিল না, তথাপি বোঝা গেল, এ বিষয়ে তাঁহার মতভেদ নাই। “হাঁ, ওস্তাদি হাত বটে” বলিয়া গোবিন্দ সকলের শেষে হাত ধুইবার উপক্রম করিতেই ময়রা সবিনয়ে অনুরোধ করিল, “যদি কষ্টই করলেন ঠাকুর মশাই, তবে মিহিদানাটাও অমনি পরখ ক’রে দিন।” “মিহিদানা? কৈ, আন দেখি বাপু?” মিহিদানা আসিল এবং এতগুলি সন্দেশের পরে এই নূতন বস্তুটির সদ্ব্যবহার দেখিয়া রমেশ নিঃশব্দে চাহিয়া রহিল! দীননাথ মেয়ের প্রতি হস্ত প্রসারিত করিয়া কহিলেন, “ওরে ও খেঁদি, ধর্ দিকি মা, এই দুটো মিহিদানা।” “আমি আর খেতে পার্‌ব না বাবা।” “পার্‌বি, পার্‌বি।” এক ঢোক জল খেয়ে গলাটা ভিজিয়ে নে দিকি, মুখ মেরে গেছে বৈ ত নয়! না পারিস্, আঁচলে একটা গেরো দিয়ে রাখ্, কা’ল সকালে খাস্। হাঁ বাপু, খাওয়ালে বটে! যেন অমৃত! তা’ বেশ হয়েচে। মিষ্টি বুঝি দুরকম কর্‌লে বাবাজী!” রমেশকে বলিতে হইল না। ময়রা সোৎসাহে কহিল, “আজ্ঞে না, রসগোল্লা, ক্ষীরমোহন—”

 “অ্যাঁ, ক্ষীরমোহন! কৈ, সে ত বা’র করলে না বাপু?” বিস্মিত রমেশের মুখের পানে চাহিয়া দীননাথ কহিল, “খেয়েছিলুম বটে, রাধানগরের বোসেদের বাড়ীতে। আজও যেন মুখে লেগে রয়েচে। বল্‌লে বিশ্বাস করবে না বাবাজী, ক্ষীরমোহন