পাতা:পল্লী-সমাজ.djvu/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
২৯
পল্লী-সমাজ


একবার ভাল ক’রে বল্‌গে যা, রমেশ! সে বড় ভাই, তার কাছে হেঁট হতে তোর কোন লজ্জা নেই। তা’ ছাড়া এটা মানুষের এম্‌নি দুঃসময় বাবা, যে, কোন লোকের হাতে পায়ে ধরে মিট্‌মাট ক’রে নিতেও লজ্জা নেই। লক্ষ্মী মাণিক আমার, যা একবার—এখন বোধ হয়, সে বাড়ীতেই আছে।” রমেশ চুপ করিয়া রহিল। এই আগ্রহাতিশয্যের হেতুও তাহার কাছে সুস্পষ্ট হইল না, মন হইতে সংশয়ও ঘুচিল না। বিশ্বেশ্বরী আরও কাছে সরিয়া আসিয়া মৃদুস্বরে কহিলেন, “বাইরে যাঁরা ব’সে আছেন, তাঁদের আমি তোর চেয়ে বেশি জানি। তাঁদের কথা শুনিস্‌নে। আর আমার সঙ্গে তোর বড়দার কাছে একবার যাবি চল্‌।” রমেশ ঘাড় নাড়িয়া বলিল, “না জ্যাঠাইমা, সে হবে না। আর বাইরে যাঁরা ব’সে আছেন, তাঁরা যাই হোন, তাঁরাই আমার সকলের চেয়ে আপনার।” সে আরও কি কি বলিতে যাইতেছিল, কিন্তু হঠাৎ জ্যাঠাইমার মুখের প্রতি লক্ষ্য করিয়া সে মহাবিস্ময়ে চুপ করিল। তাহার মনে হইল, জ্যাঠাইমার মুখখানি যেন সহসা চারিদিকের সন্ধ্যার চেয়েও বেশি মলিন হইয়া গিয়াছে। খানিক পরে তিনি একটা নিঃশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, “আচ্ছা, তবে তাই। যখন তার কাছে যাওয়া হতেই পার্‌বে না, তখন আর সে নিয়ে কথা কয়ে কি হবে। যা হোক, তুই কিছু ভাবিস্‌নে বাবা, কিছুই আট্‌কাবে না। আমি আবার খুব ভোরেই আস্‌ব।” বলিয়া বিশ্বেশ্বরী তাঁহার দাসীকে ডাকিয়া লইয়া খিড়কির দ্বার দিয়া