কথা শুনিয়া রমেশ স্তম্ভিত হইয়া রহিল। পাঁচছয়টা গ্রামের মধ্যে এই একটা বিদ্যালয়—এবং এই পাঁচছয়টা গ্রামময় তিনমাসকাল ক্রমাগত ঘুরিয়া মাত্র ৭।০ আদায় হইয়াছে! রমেশ প্রশ্ন করিল, “আপনার মাহিনা কত?” মাষ্টার কহিল, “রসিদ দিতে হয় ছাব্বিশ টাকার, পাই তের টাকা পোনর আনা।” কথাটা রমেশ ঠিক বুঝিতে পারিল না—তাহার মুখপানে চাহিয়া রহিল। মাষ্টার তাহা বুঝাইয়া বলিল, “আজ্ঞে গভর্ণমেণ্টের হুকুম কি না, তাই ছাব্বিশ টাকার রসিদ লিখে দিয়ে সবইন্স্পেক্টার বাবুকে দেখাতে হয়—নইলে—সরকারী সাহায্য বন্ধ হ’য়ে যায়। সবাই জানে, আপনি কোন ছাত্রকে জিজ্ঞাসা কর্লেই জানতে পার্বেন—আমি মিথ্যে বল্চিনে।” রমেশ অনেকক্ষণ চুপ করিয়া থাকিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “এতে ছাত্রদের কাছে আপনার সম্মানহানি হয় না?” মাষ্টার লজ্জিত হইল। কহিল, কি কর্ব, রমেশবাবু! বেণীবাবু এ কয়টি টাকাও দিতে নারাজ।”
“তিনিই কর্ত্তা বুঝি?”
মাষ্টার একবার একটুখানি দ্বিধা করিল; কিন্তু তাহার না বলিলেই নয়। তাই সে ধীরে ধীরে জানাইল যে, “তিনিই সেক্রেটারি বটে; তিনি একটি পয়সাও কখনো খরচ করেন না। যদু মুখুয্যে মহাশয়ের কন্যা—সতীলক্ষ্মী তিনি—তাঁর দয়া না থাকিলে ইস্কুল অনেকদিন উঠিয়া যাইত। এ বৎসর নিজের খরচে চাল ছাইয়া দিবেন, আশা দিয়াও হঠাৎ কেন