পাতা:পাঁচু-ঠাকুর - ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিজাতীয় বর্ণমালা । » Sጫ যে তদপেক্ষ গুরুতর দোষ হইতেছে, তাহা কি চক্ষে অঙ্গুলি নির্দেশ করিয়া দেখাইবার প্রয়োজন আছে ? “জাতিবাৎসল্য” শব্দ অভিধান হইতে, ভাষা হইতে উচ্ছিন্ন করিয়া দেওয়াই উচিত। তুমি যদি জাতিবৎসল হও, তাহা হইলে তুমি মনুষ্যের শত্ৰু, পরম শত্রু। কারণ, তোমারহদয়ে পার্থক্যরূপ মোহাগ্নি প্ৰজলিত রহিত্নীছে, আর পার্থক্যই সমস্ত অনিষ্টের মূল । ভ্রাস্তি পরিহার করে , প্রশস্ততা অভ্যাস করে, বদান্তত শিক্ষা করে,—তবে তুমি নিজের উপকার করিতে পারবে, সংসারের মঙ্গল করিতে পারবে। যদি সাধুতা থাকে, তাহ হইলে জাতীয় পার্থক্যের বিনাশ করে, ভাষার পার্থক্যের লোপ করে, এবং যত দিন তাহা ন হইতেছে, তত দিন অক্ষরের স্বাতন্ত্র্য বিলুপ্ত করিয়াও মিজ মহত্ব প্রতিপন্ন করে। অক্ষরই লিখিত ভাষার প্রাণ, সাহিত্যের অস্থি মাংস— সেই मूल কুঠারাঘাত করে। বিদেশী এই আর্য্য জাতির ভাষা শিখিতে পারে না, সুতরাং যথোচিত সৌহাৰ্দ্দ্য বিদেশীর সহিত জন্মিতে পারে না । কিন্তু শিখিতে যে পারে না, তাহার কারণ কি ? শুদ্ধ, ৰণমালারূপ অন্তরায়ের দোষে। স্বর উইলিয়ম্ জোন্স, কোলব্রুক, মোক্ষমূলর, কাউয়েল প্রভৃতি ব্যক্তির নাম যাহার করে, তাহারা নিতান্ত-নিৰ্ব্বোধ । পৃথিবীতে মনুষ্য-সংখ্যা নিয়তই বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইতেছে, তাই বলিয়। কি হরিতালের আবশুকতা স্বীকার করিতে হইবে না, অথবা ব্যবহার প্রচলিত করিতে হইবে না? এক ব্যক্তিরও যাহাতে সুবিধা বা তি হইতে পারে, তাহার অপনয়ন করা অবগুকৰ্ত্তব্য ; বিকলবুদ্ধি ব্যক্তির নিমিত্তেও যত্ন করা একান্ত উচিত। বর্ণমালা লোপ করিয়া দাও, দেখিতে পাইবে পৃথিবীতে একটিও স্বতন্ত্র ভাষা থাকিবে না। তখন বিকৃতির বলোপ হইয়া আবার প্রকৃতির জয় হইবে ।