পাতা:পাঁচু-ঠাকুর - ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোরাটাদ । Rఏ হাসিল কারবার চেষ্টা করা উচিত কি না—এই মানসিক বিতণ্ডায় কিংকৰ্ত্তব্য-বিমূঢ় হইয়া গোরাচাঁদ একটু মৌনী হইয় রছিলেন। ক্ষণকাল পরে, শেষ চিস্তাই শ্রেষ্ঠ চিন্ত, এই সার করিয়া প্রফুল্লভাবে, হাসি হাসি মুখে বললেন— “বেশ হয়েছে! তোমার এই যে অমুখের কথা বলছি, এ চমৎকার হয়েছে। তোমার কষ্ট পাবার দরকার নাই, ব্লমামি স্বয়ং সন্তান প্রসব করব, তুমি নিশ্চিস্ত হয়ে খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমোও গে। আমি রইলুম, ছেলে প্রসবের ভার ও আমার রইল।” “সে কি ? তুমি প্রসব করবে কি ?”—ত যদি হত, তবে আর ভাবনা কি বলে ?” অনেক কষ্টের উপরেও একটু হাসিয়া, বসুমতী এই কথা,কটা বলিল। “ত যদি হ’ত ?—কেন ? যদি কেন ? তা হ’তেই হবে । তুমি যেটা অসম্ভব মনে করছ, সেটা আমার মতে একটুকুও অসম্ভব নয়।—ই আমি স্বীকার করি যে, এ পর্য্যন্ত পুরুধে কুত্রাপি প্রসব করে নাই। কিন্তু এর কারণ কি? কারণ, শুদ্ধ পুরুষের অত্যাচার, স্ত্রীজাতির বিড়ম্বন, আর তোমাদের অর্থাৎ স্ত্রীলোকের কু অভ্যাস । আগে রেলের গাড়ী ছিল না, তাই বলে কি রেলের গাড়ী হ’ল না ? আগে কেবল পুরুষেই বই পড়ত, স্ত্রীলোকে রাধাবাড়া করুত—এখন কি তা উল্টে যায় নি ? কু-অভ্যাস, সমস্তই কু-অভ্যাস, আর কু-সংস্কার, আর অত্যাচার। আমাকে যুদি মiবাপ ছাড়তে হয়, বাগবাজার ছাড়তে হয়—সেও স্বীকার, তবু এবার তোমাকে আমি প্রসব হতে দিচ্ছি না। আমি ফরাসডাঙ্গায় গিয়ে বাড়ী করব, সেখনে নিজে প্রসব কবি—তবু তোমাকে আর কষ্ট সহ করিতে, একমাত্র স্ত্রীজাতিকে বিড়ম্বিত হতে দিৰ না।”