পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম ভাগ
৭৫

দিক হইতে বিচার করিতে বসিলে বিহঙ্গজাতি সম্বন্ধে একটি নূতন শাস্ত্র গঠিত হইয়া উঠে; পণ্ডিত সমাজে তাহা caliology নামে পরিচিত। এস্থলে আমরা এই শাস্ত্রের বিশেষ বিবরণ বা ব্যাখ্যা দিবার প্রয়োজন দেখি না; শুধু এইটুকু বলিলেই যথেষ্ট হইবে যে যে উপায়ে নীড় রচনা করিলে পক্ষিদম্পতির ও শাবকের জীবনরক্ষার অনুকূল হইতে পারে, সাধারণতঃ দেখা যায় যে ঠিক সেই উপায় অবলম্বিত হইয়া থাকে।

 আমরা যে দুইটি নূতন কথার অবতারণা করিলাম,—পাখী নিজের বাসা পরিষ্কার করে কি না এবং নিজের ও শাবকের জীবন রক্ষার উপযোগী করিয়া নীড় নির্ম্মাণ করে কি না,—এই দুইটি বিষয় স্বতন্ত্র ও বিচ্ছিন্নভাবে অলোচনাপাখীর স্বীয় বাসা রচনাপ্রণালী কতদূর উদ্দেশ্যমূলক;
পরিচ্ছন্নতা এই উদ্দেশ্যের অনুকূল কি না?
করিবার দরকার হয় না। দেখিবামাত্রই বুঝিতে পারা যায় যে পারিপার্শ্বিক অবস্থার সহিত মিলাইয়া উপযুক্ত উপকরণের সাহায্যে পাখী যে বাসাটি রচনা করিয়াছে তাহা সুন্দর অথবা কুৎসিত হউক তাহাতে কিছু আসিয়া যায় না; কিন্তু সেই বাসাটি যে তাহাকে এবং তাহার শাবককে নানা প্রতিকূল শক্তি ও বিপদ আপদ হইতে রক্ষা করিবার উপযোগী সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ থাকে না। শত্রুর কবল হইতে আত্মরক্ষা করিবার জন্য যে বৃক্ষপত্রান্তরালে গোপনে নীড়টি প্রস্তুত করা হয়, সেই পতার রংএর সঙ্গে নব-রচিত নীড়ের এমন আশ্চর্য্য বর্ণসাদৃশ্য দেখা যায় যে ভাল করিয়া লক্ষ্য না করিলে মানবেতর জাতির ’ত কথাই নাই, মানুষই অনেক সময়ে বুঝিতে পারে না যে ওখানে একটা বাসা আছে। রূপের দিক দিয়া যে দ্রব্য ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য না হইয়া থাকে, গন্ধের সাহায্যে হয়ত’ তাহাকে ধরা যায়, কিন্তু নৈসর্গিক রহস্য এই যে পাছে পক্ষিপুরীষের গন্ধ গাছের পাতার মধ্যে অথবা তন্নিম্নস্থ মাঠের ঘাসের উপরে গোপন নীড়টির সন্ধান প্রকাশ করিয়া