পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৪
পাখীর কথা

জন্মাইতেছে, অতএব বিষয়টা আরও পরিষ্কার করা আবশ্যক। প্রধানতঃ আমরা খাঁচার পাখী লইয়া যদিও আলোচনা করিতে বসিয়াছি, তথাপি বিজ্ঞানসম্মত পন্থা অবলম্বন করিতে হইলে স্বাধীন পাখীর তত্ত্বালোচনা না করিলেপক্ষীগৃহে এসম্বন্ধে পালকের চেষ্টা চলে না। এই জন্য গোড়াতেই আমরা স্বাধীন বন্য অবস্থায় বিভিন্ন শ্রেণীর পাখীর যৌনসম্মিলন হয় কি না সেই কথা পাড়িয়াছি। পূর্ব্বেও প্রসঙ্গক্রমে পাখীর অসবর্ণ বিবাহের কথার ইঙ্গিত আমরা করিয়াছি, বোধ হয় পাঠকের স্মরণ থাকিতে পারে। তবে ইহা স্বীকার করিতে হইবে যে মুক্ত অবস্থায় এইরূপ যৌনসম্মিলন প্রায়ই সঙ্ঘটিত হইতে পায় না, কারণ একই পরিবারভুক্ত বিভিন্ন শ্রেণীর পক্ষীদের মধ্যে এমন একটা বিরোধের ভাব থাকে যে কেহ কাহাকেও সহজে কাছে আসিতে দেয় না;—এইখানে পক্ষিপালকের কৃতিত্ব দেখিতে পাওয়া যাইবে। কেমন করিয়া সে পক্ষিভবনে সেই সকল বিভিন্ন শ্রেণীর আবদ্ধ পাখীর সম্মিলন সঙ্ঘটিত করায়, কেমন করিয়া তাহাদের প্রসূত ডিম্ব হইতে শাবক ফুটাইয়া তুলিতে কৃতকার্য্য হয়, এই সকল বিষয় নিবিষ্টচিত্তে পর্য্যালোচনা করিলে আমাদের বিস্ময়ের সীমা থাকিবে না। অথচ পাখীদের প্রকৃতিগত বৈষম্য সত্ত্বেও মানুষের চেষ্টা আশ্চর্য্যরূপে ফলবতী হইয়া বিহঙ্গজগতে বর্ণের ও সঙ্গীতের, অকারের ও প্রকৃতির নব নব উন্মেষে বিজ্ঞানের পথ আলোকিত করিয়াছে;—সেই আলোকে ভবিষ্যতে আরও অভিনব বৈচিত্র্য পরিলক্ষিত হইবে আশা করা যায়। ভারতবর্ষে বহুশতবর্ষ পূর্ব্বে অন্ততঃ সম্রাট আক্‌বরের সময়ে এইরূপ বর্ণসঙ্কর সৃষ্টির চেষ্টা হইয়াছিল; তিনি বিভিন্ন শ্রেণীর পারাবতের সংমিশ্রণে যে সমস্ত নূতন পায়রার উদ্ভাবন করিলেন তাহার উল্লেখ আমরা পূর্ব্বে করিয়াছি। জাপানে মোরগ জাতীয় বিভিন্ন শ্রেণীর পাখী লইয়া এইরূপ পরীক্ষার ফলে যে bantam