পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম ভাগ
৮৫

এবং লম্বপুচ্ছ মোরগের উদ্ভব হইয়াছে তাহারও আভাস আমরা পূর্ব্বে দিয়াছি। আধুনিক যুগে এই বিষয়টি পক্ষিপালকের কেবলমাত্র খেয়ালের জিনিস নহে; পক্ষিবিজ্ঞানের চেষ্টা এখন এইরূপ অবাধ সম্মিলনে পাখীর আকার ও প্রকৃতির তারতম্য হইল কিনা এবং তাহাকে কোনও নিয়মে বিধিবদ্ধ করা যায় কিনা তাহাই স্থির করা। তাই পাশ্চাত্য ভূখণ্ডে, অনেক জায়গায় বৎসরে বৎসরে এমন কি মাসে মাসে যে সব পক্ষিপ্রদর্শনীর ব্যবস্থা আছে তাহাতে বর্ণসঙ্কর উৎপাদনে কে কত কৃতিত্ব দেখাইয়াছে তাহা লইয়া সুন্দর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হইয়া থাকে। বিচারকেরা পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বর্ণসঙ্করগুলির আকারগত বৈচিত্র্য নিরীক্ষণ করিয়া থাকেন;—যেরূপ লক্ষণাক্রান্ত হইলে খাঁটি বর্ণসঙ্কর বলা যাইতে পারে সেই সব লক্ষণ কে কতটা ফুটাইয়া তুলিতে পারিয়াছে প্রদর্শনীক্ষেত্রে তাহাই বিচার্য্য। যে কারণেই হউক, এমনই করিয়া পক্ষিজাতি সম্বন্ধে ক্রমশঃ নূতন নূতন তত্ত্ব আবিষ্কারের সম্ভাবনা হইতেছে।

 খাঁচার মধ্যে বর্ণসঙ্কর পাখী উৎপন্ন করা যে খুব সহজ ব্যাপার তাহা কেহ যেন মনে না করেন; যতটা অয়াস স্বীকার করিতে হয়, তদনুরূপ ফলপ্রাপ্তি হইলে পক্ষিপালকের আনন্দবর্দ্ধনের ও পক্ষিবিজ্ঞানের নূতন তথ্য আবিষ্কারের সুবিধা হইতে পারে। বড় পক্ষিগৃহ না হইলে যে চলিবে না এমন নহে; তবে বিভিন্নজাতীয় বিহঙ্গ সংমিশ্রণের যতটা সুযোগ বৃহৎ aviaryতে হইতে পারে, ততটা অপেক্ষাকৃত অল্পপরিসর পিঞ্জরে সম্ভবপর নহে। এক্ষেত্রেও যে যে পাখীকে সঙ্গত করান হইবে তাহাদের বাছাই আবশ্যক; বিশেষতঃ পক্ষিণী ও পক্ষীর বর্ণ, আকার, প্রকৃতি ও কণ্ঠস্বরের প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া নির্ব্বাচন করিতে হইবে। যে পক্ষিগৃহে নির্ব্বাচিত পক্ষিণীকে রাখা হইল, তথায় অবশ্যই সেই জাতীয় পুংপক্ষীর প্রবেশ নিষিদ্ধ, কারণ তাহা না হইলে, উক্ত স্ত্রীপক্ষী স্বজাতীয় পুংপক্ষীর