পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম ভাগ
৮৭

উভয়ের অঙ্গসৌষ্ঠবের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখিতে হইবে। আধুনিক বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসার ফলে শাবকের বর্ণের তারতম্য কতকটা মানুষের ইচ্ছাধীন হইয়াছে। কৃত্রিম খাদ্যসাহায্যে কেমন করিয়া বিহঙ্গের বর্ণের উজ্জ্বলতা বর্দ্ধিত করিতে পারা যায়, তাহার উল্লেখ পূর্ব্বে করিয়াছি। বর্ণসঙ্করের দেহের এই ঔজ্জ্বল্য দর্শকের চক্ষে বড়ই মনোরম; তাই পাশ্চাত্য প্রদর্শনীতে কৃত্রিম উপায়ে পাখীর কে কেমন রং ফুটাইতে পারিয়াছে তাহা লইয়া পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হইয়া থাকে। পক্ষান্তরে কখনও কখনও বিহগ বিহগী এমন সতর্কতার সহিত নির্ব্বাচিত হয় যে তাহাদের সন্তান সন্ততির বর্ণ উক্ত জনক জননীর বর্ণ হইতে পৃথক হইয়া দাঁড়ায়। কৃত্রিম খাদ্য-সাহায্যে এই সমস্ত নবজাত শাবকের রং অধিকতর চিত্তাকর্ষক হইয়া থাকে। টিয়া-জাতীয় নীল বজ্‌রিগার্ (Blue Budgerigar) এইরূপ পক্ষিগৃহে পরীক্ষার আধুনিক উৎপত্তি। মিঃ জন্ মারস্‌ডেন (John W. Marsden) উপর্য্যুপরি তিন বৎসর বজ্‌রিগার্ পক্ষীর শাবকোৎপাদন বিষয়ে মনোনিবেশ করিয়াছিলেন। সাধারণতঃ উক্ত পক্ষীর দেহের বর্ণ সবুজ; আন্তর্জাতিক মিশ্রনের ফলে আমাদের দেশের টিয়া পাখীর ন্যায় ইহাদের বর্ণ কখনও কখনও পীতরেখা সমন্বিত, কখন বা সম্পূর্ণ পীতবর্ণ হইয়া যায়। এই পীতবর্ণের শাবককে কৃত্রিম বর্ণোৎপাদক আহার যোগাইয়া য়ুরোপীয় পক্ষিব্যবসায়িগণ নূতন বর্ণবৈচিত্র্য সঙ্ঘটিত করায়। লণ্ডন জুয়োলজিক্যাল সোসাইটির স্বনামখ্যাত ফেলো মিঃ মারস্‌ডেন কিন্তু পীতবর্ণকে উড়াইয়া দিয়া নীলবর্ণের সৃষ্টি করিবার প্রয়াস পাইয়াছেন। একাগ্রভাবে পুনঃপুনঃ চেষ্টার ফলে তিনি যে অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছেন তাহা সম্প্রতি লিপিবদ্ধ করিয়াছেন[১]। তিনি বলেন যে নীল রং ফুটাইতে হইলে ঈষৎ

  1. Avicultural Magazine, 3rd Series Vol. IX., p. 262.