পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

রাষ্ট্রসমস্যা ও পক্ষিতত্ত্ব

 সমস্ত জগৎ জুড়িয়া একটা মহাকুরুক্ষেত্রের অভিনয় হইতেছে। সভ্য জগতের সমগ্র রাষ্ট্রীয় শক্তি কায়মনোবাক্যে এই সমরানলে আহুতি দিতেছে। রাষ্ট্রনীতি ও সমাজনীতি-তত্ত্ববিদের মুখর কোলাহলে আমাদের সকলের কর্ণ প্রায় বধির হইবার উপক্রম হইয়া উঠিয়াছে,—এ সময়ে পক্ষিতত্ত্ববিৎ সংসারের সমস্ত কথা ক্ষণেকের জন্য বিস্মৃত হইয়া জগৎ ভুলিয়া, জয়পরাজয় ভুলিয়া, যদি তাঁহার স্বরচিত বিহঙ্গনিকুঞ্জে স্বপ্ন ও বাস্তবের মধ্যে আপনাকে নিমজ্জিত করিয়া রাখেন, তাহা হইলে অনেকে হয় ’ত মনে করিবেন, এমন খাপছাড়া সৃষ্টিছাড়া ব্যাপার শুধু ভারতবর্ষেই সম্ভব—শুধু ভারতবর্ষে কেন—শুধু বাঙ্‌লা দেশেই সম্ভব। হয় ’ত যে বাঙ্‌লার বুধমণ্ডলী, রাষ্ট্রনীতি-সাগর মন্থন করিয়া অমৃত ও গরল তুলিতে ভালবাসেন, তাঁহারা সেই নিরীহ পক্ষিপালকের ব্যূহমধ্যে প্রবেশ করিয়া বলিবেন, “তুমি কি চিরকালই স্বপ্ন দেখিবে, বাস্তব জগতের প্রচণ্ড মানবসমস্যা হইতে নিজেকে দূরে রাখিয়া পাখী লইয়া জীবন কাটাইবে?” বিস্মিত পক্ষিপালক হয়’ত বলিবেন, “কেন, আমার কি করা উচিত?” রাষ্ট্রনীতিজ্ঞ হয়’ত উত্তর দিবেন—“কি করা উচিত! দেখিতেছ না, এই মহাকুরুক্ষেত্র ব্যাপারের শেষ অঙ্কের যবনিকা উত্তোলিত হইয়াছে। সকলেরই মুখে মানবসমাজের, য়ুরোপীয় বিধ্বস্ত রাষ্ট্রের ও নগরীর পুনর্গঠনের আলোচনা শুনা যাইতেছে। রাজনীতি, সমাজনীতি,