পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় ভাগ
১০৩

 দেশের আপামর সাধারণের খাদ্যের ব্যবস্থা করা ষ্টেটের প্রধান কর্ত্তব্য। একটু ভাবিয়া দেখিলেই বুঝিতে পারা যাইবে যে, খাদ্য হিসাবে পক্ষিপালন করা ষ্টেটের কর্ত্তব্য। অন্ততঃ পাশ্চাত্য ভূখণ্ডে ও চীন, জাপান, মিশর প্রভৃতি দেশে মানুষের খাদ্যের জন্য পক্ষিপালনের ব্যবস্থা আছে; ষ্টেট যে সর্ব্বত্রই প্রত্যক্ষভাবে পাখী লইয়া farming আরম্ভ করিয়া দেয়, এমন কথা আমি বলিতেছি না; তবে অনেক প্রকারে ইহার সাহায্য করিয়া থাকে।

 এ পর্য্যন্ত যতটুকু আলোচনা করিলাম, তাহাতে সহজেই অনুমান করা যাইতে পারিবে যে, কোনও বিধ্বস্ত দেশের পুনরুদ্ধারকল্পে সেই দেশবাসীর সমগ্র শক্তি নিয়োজিত করিতে হইলে, যদি সম্পূর্ণরূপে সুফললাভের প্রত্যাশা করিতে হয়, তাহা হইলে মানবেতর বিহঙ্গকে বাদ দিলে চলিবে না। যদি স্বদেশের মাটি, স্বদেশের জল, স্বদেশের ফুল, স্বদেশের ফলকে ধন্য করিতে চান, তাহা হইলে মানুষকে নিজের সমাজবদ্ধ সঙ্কীর্ণ গণ্ডীর বাহিরে আসিয়া পাখীর সহিত অনেক স্থলে মিত্রতাসূত্রে আবদ্ধ হইতে হইবে, আবার কোনও কোনও স্থলে বৈরিভাব স্থাপন করিতে হইবে। বেল্‌জিয়মের মত দলিত ভূখণ্ডকে সুজল, সুফল, শস্যশ্যামল করিতে হইলে, কেমন করিয়া সেই কার্য্যে ব্রতী হইতে হইবে, তাহার সম্যক্ আলোচনার স্থান ও সময় আমাদের এখন নাই; তবে পক্ষিতত্ত্বের দিক্ হইতে কতকটা পথনির্দ্দেশের চেষ্টা করিলে, তাহা বোধ হয়, ধৃষ্টতার পরিচায়ক হইবে না। তাই আজ যখন চারিদিকে Reconstruction ও Reparationএর কথা শুনিতে পাই, তখন স্বতঃই এই প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে জাগিয়া উঠে ষে, সাড়ে চার বৎসর ধরিয়া লক্ষ লক্ষ গুলি-গোল ও বোমায় যে সকল মানবসহায় পাখী বিনষ্ট ও দেশ হইতে বিতাড়িত হইয়া গেল, তাহার কোনও reparation হইবে কি?