পাতা:পাখীর কথা - সত্যচরণ লাহা.pdf/১৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
পাখীর কথা

হইতে পারে নাই, খাঁচায় রাখিয়া তাহার রীতিনীতি, গতিবিধি, আহার, উৎপতনভঙ্গী প্রভৃতি দেখিবার যথেষ্ট সুযোগ করিয়া লইয়াছে। তাহারই ফলে এতদিনে খাঁচার পাখী লইয়া aviculture বিজ্ঞানশাস্ত্রের অঙ্গীভূত হইয়া মানবের আনন্দ ও জ্ঞানবৃদ্ধির সহায়তা করিতে পারিয়াছে। ইহা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। নবীন আশ্রমপন্থীরা ঠিক যে অস্বীকার করেন তাহা নহে; তাঁহারা বলিতে চাহেন যে, আবার খাঁচার পাখীকে বনের পাখী করিয়া দিলে, আমাদের অধিকতর জ্ঞানলাভ হইতে পারে এবং পাখীদেরও পক্ষে অধিকতর হিতকর হইতে পারে।

 এখন বিবেচনা করিয়া দেখিতে হইবে যে, বহু যুগ ধরিয়া মানবাবাসে পিঞ্জরস্থ বিহঙ্গকে চিনিয়া লইবার সুযোগ যদি আমাদের না হইত, তাহা হইলে আজ সেই বনের পাখীকে বনে উড়াইয়া দিয়া তাহার সম্বন্ধে কি কি বিষয়ে scientific observation হওয়া উচিত (যাহা আবদ্ধ অবস্থায় হয়ত ঠিক হইতে পারিত না) তাহা কি কেহ হিসাব করিয়া বলিতে পারিতেন? পিঞ্জর-মধ্যে কৃত্রিম পরিবেষ্টনীর ভিতরে পাখীর বর্ণ, কণ্ঠস্বর ও সাধারণতঃ জীবনের ইতিহাস—পুরুষানুক্রমে পর্য্যবেক্ষণ করিয়া আমাদের মনের মধ্যে হয়’ত এ প্রশ্ন উঠিতে পারে,—স্বাধীন বন্য অবস্থায় প্রকৃতির ক্রোড়ে লালিত হইয়া ইহার বর্ণ, কণ্ঠস্বর প্রভৃতির কোনও তারতম্য হয় কি না? কোনও পক্ষিতত্ত্ববিৎ এই প্রশ্ন এড়াইয়া যাইতে চেষ্টা করেন না। তাহা যদি করিতেন, তাহা হইলে তাঁহাদিগের উপর অবৈজ্ঞানিকতার দোষারোপ করা হইত। তাঁহারা বলেন যে, তাঁহাদের বহুযুগব্যাপী সাধনার ফলে পক্ষী সম্বন্ধে যে জ্ঞান সঞ্চিত হইয়াছে, তাহারই উপর নির্ভর করিয়া যদি কেহ কিছু নূতন কথা বলেন, তাহা বৈজ্ঞানিকভাবে যাচাই করিয়া লওয়া আবশ্যক; দেখিতে হইবে যে নূতন কিছু জোর করিয়া বলিলে টিকিবে কি না। এই সে একটা রব উঠিয়াছে,—খাঁচার পাখীকে